সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে শহরের বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ করার দিনক্ষণ ঘোষণা করেও শেষ পর্যন্ত পিছু হঠলো আসানসোল পুরনিগম। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিরোধীদের দাবি দলের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে পুরনিগম।
প্রসঙ্গত আসানসোল পুরনিগমের পক্ষ থেকে হটন রোডের ধারে অবৈধভাবে নির্মিত দোকানগুলি সরিয়ে ড্রেন তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই মতো গত সোমবার থেকে প্রস্তুতি শুরু করে পুরনিগম। সেদিন রাস্তায় নেমেছিলেন পুর চেয়ারম্যান, বোরো চেয়ারম্যান ও ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক। মঙ্গলবার মেয়র বিধান উপাধ্যায় নিজে পুর চেয়ারম্যান ও বোরো চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে রীতিমতো হাতজোড় করে দোকানদারদের সরে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। এমনকি বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটা পর্যন্ত সময়ও নির্ধিরিত করে দেন। এর পাশাপাশি বৃহস্পতিবারের অভিযান কিভাবে চালানো হবে তা নিয়ে বুধবার সকালে আসানসোল পুরনিগমে নিজের চেম্বারে মিটিং করেন মেয়র। সেই মিটিংয়ে পুলিশ আধিকারিকও ছিলেন। অন্যদিকে বুধবার প্রায় সারাদিন ধরে হটন রোড এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে পুরনিগমের তরফে মাইকিং করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে আসানসোল পুরনিগমের তরফে হটন রোড এলাকায় মাইকিং করে ঘোষণা করা হয় যে, মানবিকতার কারণে উচ্ছেদন অভিযান আপাততঃ স্থগিত করা হচ্ছে । যদিও পুরনিগমের ঘোষণা মতো বুধবার রাত থেকেই হটন রোডের ধারের দোকানদাররা নিজেরাই দোকানের কাঠামো খুলে নেওয়া শুরু করেছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরের আগেই রাস্তা দখল করে থাকা দোকান গুলি প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়।
অন্যদিকে স্বাভাবিক ভাবেই, আসানসোল পুরনিগম ও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। সরব হন বিজেপির রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় ও আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এবং কংগ্রেস নেতা প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি । বিজেপি ও কংগ্রেসের নেতা ও বিধায়ক দাবি করেন , শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দলের জন্য আসানসোলের মানুষেরা ন্যুনতম পুর পরিসেবা পাচ্ছেন না। হটন রোডের মতো রাস্তায় নিত্যদিন যানজট লেগে থাকে। যা নিয়ে শহরের মানুষ নাজেহাল।
অন্যদিকে হটন রোড থেকে বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ ও অটোর পরিবর্তে টোটো স্ট্যান্ড করা নিয়ে পুরনিগমের সিদ্ধান্তের প্রথম থেকেই বিরোধীতা করে আসছিলেন আইএনটিটিইউসি নেতা রাজু আলুওয়ালিয়া। এদিন তিনি বলেন, “এইসব দোকানদারেরা যাবে কোথায়? আগে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।”
এদিনের ঘটনায় শহরের মানুষও ধন্দে। তাঁদের প্রশ্ন যখন দোকানদারেরা নিজেরাই তাঁদের দোকান সরিয়ে নিলেন তখন পুরনিগম কেন উচ্চেদ অভিযান বন্ধ রাখল? বিরোধীরা যে গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ তুলছে তবে কি সেটা সত্যি?
এদিন মেয়র বিধান উপাধ্যায় শহরে উপস্থিত না থাকায় সরাসরি তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তিনি ফোনে সংবাদ মাধ্যমের একাংশকে জানান কিছু দোকানদারের অনুরোধে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছে। হটনরোডে যে ড্রেন তৈরির পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে তা বাতিল করা হয়নি। যদিও পুর চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি।





