সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- দলীয় কর্মীসভায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে কটাক্ষ করে বিতর্কে জড়ালেন পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। সমাজ মাধ্যমে বিধায়কের ওই মন্তব্যের একটি ভিডিও ভাইরাল হতেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। পাল্টা তাঁর শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কটাক্ষ করেছেন পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের নেতা।
প্রসঙ্গতঃ, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে, মে মাসের শেষ দিক থেকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার ব্লক স্তরের কর্মীসভা শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এইসব কর্মীসভার মুল বক্তা দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। দিন দুয়েক আগে দুর্গাপুরের ব্লকের এমনই একটি কর্মীসভায় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “কীভাবে সিঁদুর খেলা শুরু করেছে বিজেপি সরকার ! দেখছেন তো ? গোটাটাই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা । গোটাটাই নাটক । পাকিস্তানের সঙ্গে ফিটিং করে এই খেলা । চিত্রনাট্য । পুরো কাশ্মীর জুড়ে মিলিটারি থাকে । ইনসাস রাইফেল নিয়ে প্রহরায় থাকে । তাহলে পহেলগাঁওয়ে কেন সেদিন সেনাবাহিনী ছিল না ? আসলে এটা ছিল একটা চিত্রনাট্য ।” এরপরেই তৃণমূল বিধায়ক দলের কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “মনে রাখবেন সিঁদুর বাঙালির রক্তে । সিঁদুর মায়েদের মাথায় থাকে । তাই এই সিঁদুর নিয়ে যাঁরা রাজনীতি করছেন তাঁদেরকে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দিন ।”
তৃণমূলের বিধায়কের করা ওই মন্তব্য নিয়ে একটি ভিডিও ক্লিপ ঝড়ের বেগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তারপরই বিধায়কের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। সারা দেশ যখন “অপারেশন সিঁদুর” এর সফলতা নিয়ে দেশ ও সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে তখন তৃণমূল বিধায়কের এহেন মন্তব্য ঘিরে আলোচনা- সমালোচনার ঝড় ওঠে। পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসে থাকলে এইসব কথা বলা যায় । এইভাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অপমান করে দেশ বিরোধী কথা বলার জন্য তার বিরুদ্ধে কোন এফআরআরও হবে না। কারণ, তিনি তো আবার অনুব্রত মণ্ডলকে ” গুরু” বলে দাবি করেন। আসলে, এরা কোথায় কি কথা বলতে হয় সেটাই জানেনা। এরা অর্ধ শিক্ষিত। কোনমতে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে। এদের কাছ থেকে এর বেশি আর কি আর আশা করবেন! এতো যদি পাকিস্তান প্রীতি, তাহলে পাকিস্তানে চলে যান। কে মানা করেছে।”
যদিও তৃণমূল বিধায়ক সাফাইয়ে তাঁর বক্তব্যকে অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে দাবি করে বলেন, “দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি সেনাবাহিনীকে সবসময় সম্মান করি। সেনাবাহিনীর সাফল্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি সেটাই বলেছি। বিজেপিকে অভিযোগ করতে দিন। “
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই বিতর্কের মধ্যে তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে ইমেলের মাধ্যমে কুলটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের নেতা জিশান কুরেশি ৷





