সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ- ঐতিহ্যবাহী পটচিত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাঁকুড়া জেলার দীর্ঘ ইতিহাস। এই পটচিত্রে সাধারণত পৌরাণিক কাহিনী, লোককথা, সামাজিক জীবন এবং ধর্মীয় বিষয়গুলি ফুটিয়ে তোলা হয়। অভাব , দারিদ্র্য এবং অশিক্ষার সাথে সংগ্রাম করে প্রায় বিলুপ্তির পথে এই শিল্প। তবে লোকসংহিতা ফাউন্ডেশনের হাত ধরে পুনরুত্থানের চেষ্টায় এই পট শিল্প। আর তার জন্য মাধ্য়ম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে রাখিকে।
বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের শুশুনিয়া পাহাড় সংলগ্ন ছবির মত এক অরণ্য গ্রাম ভরতপুর, এই শিল্পের জন্য বিখ্যাত। যেখানে শতাব্দী ধরে এই শিল্পচর্চা হয়ে আসছে। এই ভরতপুরে বাস পটচিত্র শিল্পীদের। পটচিত্রের সঙ্গে তাদের জড়িয়ে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। পটচিত্র অঙ্কনে তারা সিদ্ধ হস্ত হলেও এই গ্রামের জীবন জীবিকার সঙ্গে তার সম্পর্ক ভিন্ন। পটুয়া শিল্পীদের আদি বাসস্থান এই পটুয়া গ্রামে। বাঁকুড়ার ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প ঘরানা পটচিত্র এদের মাধ্যমেই আজও বেঁচে আছে।
এবার লোকসংহিতা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় গ্রামের পটুয়া শিল্পীরা রাখিতে ফুটিয়ে তুলেছেন পটচিত্র। রাখি গুলির মধ্যে ফুটে উঠেছে, শিকারের গল্প, পৌরাণিক কাহিনী এবং আদিবাসী জীবনধারা। রাখিগুলি তৈরি করতে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়। শুশুনিয়ার পাহাড় তলিতে খুঁজে খুঁজে পটুয়ারা বিভিন্ন রঙের পাথর জোগাড় করে আনেন। তারপর সেগুলি গুঁড়ো করে নিয়ে বিভিন্ন ধরণের রঙ প্রস্তুত করেন। এছাড়াও বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রঙ তৈরি করেন বলে এদের আঁকা পটের রঙ বহুদিন অবিকৃত থাকে। ক্যেমিক্যাল রঙের মত অত উজ্জ্বলতা না থাকলেও এদের আঁকা পটে রয়েছে চোখের আরাম।
এই রাখি পটশিল্পের প্রচীন ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে পারবে কিনা সেতো সময়ই বলবে, তবে পটচিত্রের রাখি ইতিমধ্যেই মানুষের নজড় কেড়েছে।





