eaibanglai
Homeএই বাংলায়বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গিয়ে প্রকাশ্যে ডিএফওকে ধমক, বিতর্কে তৃণমূল বিধায়ক

বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গিয়ে প্রকাশ্যে ডিএফওকে ধমক, বিতর্কে তৃণমূল বিধায়ক

সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গিয়ে প্রকাশ্যে দুর্গাপুরের ডিএফওকে ধমক দিয়ে বিপাকে পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। ধমকের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরপরই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় বির্তক। যদিও ওই ঘটনায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন বিধায়ক।

প্রসঙ্গত প্রায় ২১ হেক্টর জমিতে ৩৩ হাজার বৃক্ষরোপনের পরিকল্পনা নিয়েছে দুর্গাপুর বন দপ্তর। দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের হেতেডোবা শিল্পতালুকের পাশে বাঁশগোড়া এলাকায় এই বৃক্ষরোপনের সূচনা হয় গত ১৫ অগাস্ট। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নামবালম, পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় দফতরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক ডঃ সৌরভ চ্যাটার্জি, আসানসোল দুর্গাপুরে উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান কবি দত্ত ও দুর্গাপুর ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার বা ডিএফও অনুপম খাঁ।

বিতর্কিত ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সেই অনুষ্ঠানের মধ্যেই হটাৎ উত্তেজিত হয়ে পড়েন বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এবং বন দপ্তরের ডিএফও অনুপম খাঁকে ধমকাতে শুরু করেন। নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে বলতে শোনা যায়, তিনি এলাকার বিধায়ক, তাঁকে না জানিয়ে, তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করে কেন বাঁশগোড়া এলাকায় গাছ লাগানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তাঁর সঙ্গে আলোচনার দরকার ছিল। পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকের সামনেই তিনি চিৎকার করে বন আধিকারিক অনুপম খাঁকে এই ব্যাপারে আপত্তি জানান। যদিও সেখানে উপস্থিত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও এডিডিএ-এর চেয়ারম্যান কবি দত্ত বিধায়ককে শান্ত করে পরিস্থিতি সামাল দেন।

বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র বলেন, “একজন সরকারি আধিকারিককে অন্য এক সরকারি আধিকারিকের সামনে ধমকাচ্ছেন বিধায়ক। সেখানে সবাই রয়েছেন। ভাবা যায়! এর থেকে বোঝা যায়, শাসক দলের বিধায়কেরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করেন।”

অন্যদিকে বিতর্কিত ওই ঘটনা নিয়ে রবিবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ বলেন,”পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার ওই এলাকায় প্রায় বারো হাজার মানুষের বসবাস। তাদের অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে কোন আলোচনা ছাড়াই এমনকি আমার সাথে আলোচনা না করেই বৃক্ষরোপনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন এই কর্মসূচির বিরোধীতা করে তাদের সমস্যার কথা জানান। যেকোনো বিপদে তাদের পাশে থাকতে আমি দায়বদ্ধ। তাই তাদের জন্য আমার এই লড়াই। তবে আমার কথার জন্য কেউ দুঃখ পেলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।”

অন্যদিকে, দুর্গাপুরের ডিএফও বিষয়টি নিয়ে তাঁর বক্তব্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। মনে হচ্ছে আমরা ঠিক সময়ে গোটা বিষয়টি বিধায়ককে জানাতে পারিনি। তা উচিত ছিলো। “

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, প্রতাপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁশগড়া, বাঁশিয়া, প্রতাপপুর গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম মিলিয়ে বারো হাজার আদিবাসী জনজাতির বসবাস। এলাকার জঙ্গল থেকেই তাঁদের রুটি রুজি চলে। কয়েক বছর ধরেই এলাকার কিছু জায়গা নিয়ে বন বিভাগের সাথে তাদের বিবাদ চলছে। অভিযোগ এরই মধ্যে আদিবাসী মানুষদের সঙ্গে কোনো আলোচনা বা জমি মাপযোগ না করেই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নেয় বনদপ্তর। যা নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয় এবং তাঁরা বিধায়কের দ্বারস্থ হন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments