সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- ভক্তি , জ্ঞান, যোগ ও কর্ম- জীবনে এই চার প্রকার যোগের সমন্বয় করবো কী করে? এই প্রশ্নের উত্তরে স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ বলছেন, “ভক্তি হল ঈশ্বরের সাথে এক সম্পর্ক পাতিয়ে তাঁকে ভালবাসা আর জ্ঞান হল নানান ভাব মনে উঠছে, চলেও যাচ্ছে। মনের ভেতরে কোন এক স্থির সত্ত্বা এসবকে ফিল করে। এই স্থির সত্ত্বা কে খোঁজা, যোগ হল ধ্যান করা আর কর্ম হল স্বার্থচিন্তা না করে অন্যের কল্যাণ করা। এগুলির মাঝে যেটা আপনার সবচেয়ে ভাল লাগে সেটা যেন অনার্স পেপার, বাকী 3-টি পাশ। এভাবে সমন্বয় করে সাধনা করুন। অনার্সটা রোজ অভ্যাস করা আর এক-একদিন একেকটা পাস পেপার।”
এই প্রসঙ্গে মহারাজ আর ও বলেন,“আপনার কি দীক্ষা হয়েছে? রামকৃষ্ণ মিশনে দীক্ষার সময় যে সাধনা বা উপাসনা পদ্ধতি বলা হয় সেই সাধনায় চার পথের সমন্বয় থাকে। এই পদ্ধতি এখানে আলোচনা করবো না। তবে আপনি একটা বই পড়ে দেখতে পারেন “উপাসনা ও প্রার্থনার শক্তি।” ওখানে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে সাধনার পদক্ষেপগুলি।”
এছাড়াও 4-টি সাধনা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করার কথা বলেন মহারাজ। যেমন তাঁর কথায়,‘
ভক্তি > মা’কে চিঠি লেখা।
জ্ঞান > পরিস্থিতিগুলি আসছে-যাচ্ছে সিনেমার মতো।
যোগ > সব পরিস্থিতিতেই মন শান্ত রাখবো।
কর্ম > সমাজকে কি দিচ্ছি?
প্রতিটি পথেই অবশ্য নানারকম অনুশীলন দেওয়া হয়, এক-একদিনে একেক রকম। নিঃস্বার্থ সেবা বা কর্মযোগও নানাভাবে করা যায়। শ্রীশ্রীমা বলেছিলেন, “যার আছে সে মাপো, যার নেই সে জপো।” অর্থাৎ অন্যকে নিষ্কামভাবে দাও যদি তোমার কিছু থাকে (শিক্ষা, অর্থ, খাবার, কাপড় ইত্যাদি)। আর যদি কিছু না থাকে তাহলে জপ করো অন্যের কল্যাণ কামনা করে। এরকম আনেক গ্রুপে মেম্বাররা নিজের-নিজের বাড়িতে বসেই সমবেত প্রার্থনা করেন মানুষের জন্য। শ্রীশ্রীমা নিজেও এভাবে জপ করতেন সবার মঙ্গলের জন্য। আপনিও এভাবে করতে পারেন। যখনই সুবিধা হবে, অন্যের কল্যাণ কামনা করে মন্ত্রজপ করতে পারেন। বাসে বা গাড়িতে যেতে-যেতে কিছুক্ষণের জন্য। টিভির ব্রেকের সময়। বিশ্রাম করা, রান্না, বেড়াতে-বেড়াতে। যখনই একটু ফাঁকা থাকবেন, 2-মিনিটের জন্য হোক, কি 10-মিনিটের জন্য।’





