সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- ২১ সেপ্টেম্বর সকালবেলায় মহালয়ায় দুর্গা হচ্ছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুদীপ্তা রায়। থার্ড আই ক্রিয়েশন ইউটিউব চ্যানেলের মহালয়ায় দুর্গা হয়েছেন তিনি। প্রথমবার মহালয়ায় দুর্গা চরিত্র করতে গিয়ে তার কেমন অভিজ্ঞতা হলো? মহালয়া নিয়ে তার নস্টালজিয়াই বা কেমন- এইসব নিয়েই দীর্ঘক্ষণ কথা হল ‘এই বাংলার’ সাংবাদিক সঙ্গীতা চৌধুরীর সঙ্গে। চলুন জেনে নিই সুদীপ্তার কাছে মহালয়া ঠিক কেমন?
সঙ্গীতা চৌধুরীঃ আশালতা চরিত্র থেকে তুলসী- কোন চরিত্রটা ব্যক্তি জীবনে সুদীপ্তার খুব কাছাকাছি?
সুদীপ্তাঃ চোখের বালির আশালতা আর ফেরারী মনের তুলসী-দুটো চরিত্রেরই কিছু কিছু জিনিস আমার চরিত্রের সঙ্গে মেলে যেমন আশালতা খুব চুপচাপ শান্ত একটু লজ্জা লজ্জা ভাব, এগুলো আমার মধ্যেও আছে আর তুলসীর মজা করা, আপনজনকে ভালোবাসা এই ব্যাপারগুলোই আমার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু তুলসী যেভাবে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করে সাধারণত আমার পক্ষে সেই ভাবে সবসময় প্রতিবাদ করা সম্ভব নয়, হ্যাঁ অন্যায়ের যতটুকু প্রতিবাদ করা দরকার ততটুকু নিশ্চয়ই করি কিন্তু রিয়েল লাইফে হয়ত ততটা হয়ে ওঠে না। আবার অন্যদিকে আশালতা যেহেতু অনেক পুরনো একটা চরিত্র, তার মধ্যে কুসংস্কার আছে সেই ব্যাপার গুলো আমার মধ্যে নেই। তো দুটো চরিত্রের সঙ্গেই আমার কিছু না কিছু মিল আছে আর কিছু না কিছু অমিল আছে।
সঙ্গীতা চৌধুরীঃ মহালয়ার কোন চরিত্রটা করতে গিয়ে মনে হয়েছে এই চরিত্রটা আরেকটু ভালো হতে পারতো?
সুদীপ্তাঃ এই বছর থার্ড আই ক্রিয়েশনের মহালয়াতে মহিষাসুরমর্দিনীর পাশাপাশি আমি মহালক্ষী এবং মহাকালী ও মহাসরস্বতীর চরিত্রেও অভিনয় করেছি। যেহেতু আমি একজন অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী সেই হিসেবে বলতে গেলে প্রত্যেকটি নৃত্যশিল্পী বা অভিনেত্রীর এটা স্বপ্ন থাকে যে সে কখনও দুর্গা বা মহিষাসুরমর্দিনীর চরিত্রে অভিনয় করবে, তো সেই স্বপ্নটা আমার পূরণ হয়েছে যে কারণে আমি ভগবানের কাছে ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ। কিন্তু তুমি যেটা প্রশ্ন করেছো যে কোন চরিত্র করতে গিয়ে কী মনে হয়েছে আরেকটু ভালো অভিনয় করা যেত সেক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে মহাকালীর চরিত্রটা বোধহয় আমি আরেকটু ভালো করে ফুটিয়ে তুলতে পারতাম। আসলে আমাদের প্রচন্ড কম সময়ে দুদিনের মধ্যে শুটিংটা হয়েছে, কারণ আমার সিডিউল টা ভীষণ ব্যস্ত ছিল তাই তাড়াহুড়োর মধ্যে শুটিংটা হয়েছে। তো সেদিক থেকে আমার মনে হয়েছে মহাকালীটা আমি আরেকটু ভালো করতে পারতাম। তবে এটাই তো মহালয়াতে আমার শেষ কাজ নয়, আশা রাখি আগামী দিনে আমি আরও কাজ করবো এবং তখন আরও বেটার করার চেষ্টা করব। তবে আমার আশা আছে এই বছরের থ্রার্ড আই ক্রিয়েশনের মহালয়া দর্শকদের খুব ভালো লাগবে।
সঙ্গীতা চৌধুরীঃ মহালয়ার ক্ষেত্রে নস্টালজিয়া বলতে আপনি কী বোঝেন?
সুদীপ্তাঃ দেখো আমরা যারা বড় হয়ে গেছি তাদের প্রত্যেকের জীবনেই মহালয়া ছোটবেলার অনেক স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। তবে আমার ছোটবেলায় মহালয়ার স্মৃতি বলতে গেলে বলব রেডিওর তুলনায় আমি ডিডি বাংলার মহালয়া দেখাটা বেশি এনজয় করতাম। তার কারণ প্রথম থেকে নৃত্য এবং অভিনয়ের প্রতি আমার একটা ঝোঁক ছিল।টিভিতে যখন দেখতাম যে দেবী দুর্গার চরিত্রে একজন অভিনয় করছেন তিনি এত দেখতে সুন্দর এবং এত সুন্দর নাচ করেন এই বিষয়গুলো আমাকে খুব আনন্দ দিত, বড় হয়েও যখন টিভিতে নৃত্যশিল্পীদের অভিনয় বা নাচ দেখতাম সেগুলো আমাকে ভীষণভাবে উৎসাহিত করত। মহালয়া শেষ হওয়ার পর আমি সব সময় দুর্গার মত চোখ বড় বড় করে হাতের মধ্যে লাঠি নিয়ে সারাক্ষণ ঘুরে বেড়াতাম।
সঙ্গীতা চৌধুরীঃ থার্ড আই ক্রিয়েশনে কাজ করে কেমন লেগেছে?
সুদীপ্তাঃ থার্ড আই ক্রিয়েশনের সঙ্গে কাজ করে কতটা ভালো লেগেছে সেটা মুখে বলা যাবে না, সৌরদীপ আমার থেকে বয়সে বড় হলেও ওকে আমি ভাইয়ের মতো ভালোবাসি। ফেরারি মন থেকেই ওর সাথে একটা আলাদা বন্ডিং, তো ওই প্রথম আমাকে মহালয়ায় দুর্গা হওয়ার জন্য বলে পরবর্তীতে পায়েল দি ও দ্বৈপায়নদার সঙ্গে পরিচয় হয়, তবে ওদের সঙ্গে পরিচয় মহালয়া সূত্রে হলেও ওদের নৃত্যের ফ্যান আমি অনেক আগে থেকেই, তো পায়েল দি আর দ্বৈপায়ন দার সঙ্গে কাজ করা একটা আলাদা ভালো লাগার ব্যাপার আর ওনারা যেভাবে গাইড করেছেন এটার জন্য আমি সত্যি ওনাদের কাছে ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ আর আমার সত্যি কাজটা করতে খুব ভাল লেগেছে। কখনও মনে হয়নি আমি একটা অন্য প্রোডাকশনে এসে কাজ করছি, মনে হয়েছে এই প্রোডাকশনটা আমার নিজেরই এতটাই আনন্দ মজা করতে করতে কাজগুলো হয়েছে।





