জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, তালডাংড়া, বাঁকুড়া -: মাত্র দু’মাস আগে তালডাংড়ার লদ্দা ব্রাহ্মণডিহা গ্রামের এক ক্ষেতমজুর পরিবারে নেমে আসে চরম বিপর্যয়। হঠাৎ ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে দেহত্যাগ করেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী গৃহকর্তা। রেখে যান চার নাবালিকা কন্যা ও স্ত্রী সরস্বতী মাজিকে। কন্যাদের নিয়ে চরম বিপদে পড়ে যান তিনি। সেইসময় নিজের সাধ্যমতো চাল, ডাল, তেল, নুন সহ সামান্য কিছু খাদ্যসামগ্রী নিয়ে অসহায় পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়ান লদ্দা গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবিকা হেনা খাতুন।
এবারের সমস্যা অন্যরকম। একদিকে দু’বেলা পেটভরে ঠিকমত খাবার জুটছেনা, আর এদিকে ‘দুয়ারে দুর্গাপুজো’ হাজির। সবাই যখন নতুন পোশাক পরে উৎসবে মেতে থাকবে তখন তার সন্তানদের পরনে থাকবে পুরনো জামা – এই চিন্তা যখন সরস্বতী দেবীকে কুঁড়েকুঁড়ে খাচ্ছিল ঠিক তখনই তার দুয়ারে নতুন পোশাক নিয়ে হাজির হন হেনা দেবী। তারপর ওই চার নাবালিকা কন্যার হাতে তুলে দেন নতুন পোশাক। বাদ যাননি সরস্বতী দেবী। তিনিও পান নতুন বস্ত্র। এগুলি পেয়ে প্রত্যেকেই খুব খুশি। সদ্য স্বামীহারা সরস্বতী দেবী বললেন, পুজোর সময় বাবাহারা সন্তানরা নতুন পোশাক পাবেনা ভেবে খুবই চিন্তিত ছিলাম। তবে মনের মধ্যে একটা বিশ্বাস ছিল কেউ না আসুক করুণাময়ী হেনা দেবী ঠিক আসবেন এবং উনি এলেন। ঈশ্বর উনার মঙ্গল করুন। নদীয়ার কাঁচড়াপাড়ার বিশিষ্ট সমাজসেবী সোনালী পাল বললেন, আরবি ‘হেনা’ শব্দের অর্থ ‘আশীর্বাদপুষ্ট’। সত্যিই উনি ঈশ্বরের আশীর্বাদপুষ্ট। তাইতো সাধারণ মানুষের পাশে থাকছেন। এটাই এই দেশের তথা বাংলার প্রকৃত চিত্র। অন্যদিকে হেনাদেবী ছোট্ট প্রতিক্রিয়া দিয়ে বললেন, বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের সময় যদি একজনের মুখেও হাসি ফোটাতে পারি তাহলে সেটাই হবে আমার বড় প্রাপ্তি। প্রসঙ্গত এটাই প্রথম নয়, এর আগে হেনাদেবী বারবার এলাকার অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।





