সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- অস্ত্রপোচারের পর সেলাই না করেই রোগীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ আসানসোলের বেসরকারি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। গ্রামীন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের তৎপরতায় মৃত্যুপথযাত্রী প্রৌঢ় রোগী ফিরে পেলেন জীবন।
রূপনারায়ণপুর পিঠাকিয়ারি আদিবাসী পাড়ার বছর ৬৫’র যতীন্দ্রনাথ মারান্ডি হাইড্রোসিলের সমস্যায় ভুগছিলেন। স্থানীয় চিকিৎসক জানান অস্ত্রপোচার করতে হবে। গ্রামের এক ব্যক্তির পরামর্শে অস্ত্রপোচারের জন্য মিহিজামের একটি নার্সিংহোমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি । তাকে জানানো হয় দেওঘর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসে অস্ত্রপোচার করবেন। সব মিলিয়ে খরচ পড়বে ১০হাজার টাকা। দীনদরিদ্র প্রৌঢ় কোনমতে ওই টাকা জোগাড় করে নার্সিংহোমে ভর্তি হন। অস্ত্রপোচারের দুদিন পর তাকে ছেড়েও দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়ি ফিরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় রোগীর। চিকিৎসক দেখানোর অর্থ না থাকায় তিনি গ্রামের স্বাস্থ্য কর্মী স্বপন দাসের শরণাপন্ন হন। স্বপনবাবু বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখেন অস্ত্রপোচারের পর ক্ষতস্থানে কোনরকম সেলাই করা হয়নি। ফলে ওই স্থানে ইনফেকশন হয়ে গেছে। তিনি অবিলম্বে রোগীকে গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। সেই মতো তাকে পিঠাকিয়ারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাক্তার বিনয় রায়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয় তার। দীর্ঘ ২৭ দিন ধরে চিকিৎসা চলার পর অবশেষে সুস্থ হয়ে গত বুধবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। জানা গেছে ডাক্তার বিনয় রায় শুধু চিকিৎসাই করেননি নিজের উদ্য়োগে ওই দীন দরীদ্র রোগীর জন্য দামী ওষুধ ও পথ্যেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। প্রৌঢ় রোগী যতীন্দ্রনাথ মারান্ডির কথায় ডাক্তার বিনয় রায় শুধু একজন চিকিৎসকই নন “গরীবের ভগবান”।
অন্যদিকে এই ঘটনায় টাকার নামে রমরমিয়ে চলা বেসরকারি নার্সিংহোম ও তাদের পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কীভাবে, কাদের মদতে কোনো অভিজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া এই নার্সিংহোমগুলি চলছে? সরকারি নজরদারি ও ভূমিকা নিয়েও উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। কবেই বা সাধারণ মানুষের রক্ত জল করে উপার্জন করা টাকা শোষনকারী এইসব নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ হবে? প্রশ্ন তুলেছেন শিল্পশহরের সাধারণ খেটে মানুষ।






