eaibanglai
Homeএই বাংলায়নদিয়ার পালপাড়া আজও বহন করছে পান্নালাল ভট্টাচার্যের স্মৃতি

নদিয়ার পালপাড়া আজও বহন করছে পান্নালাল ভট্টাচার্যের স্মৃতি

সংবাদদাতা,নদিয়াঃ- দীপান্বিতা উৎসব আসলেই নিজের শ্যামা সংগীতে জেগে ওঠেন সাধক শিল্পী পান্নালাল। তাঁর অকাল প্রয়াণের এতো বছর পরেও বাঙালির স্মৃতিতে এখনও শ্যামা সংগীত আর পান্নালাল ভট্টাচার্য সমার্থক।

নদিয়ার পালপাড়া আজও বহন করছে বাংলা শ্যামা সংগীতের এই কিংবদন্তি শিল্পী – পান্নালাল ভট্টাচার্যের স্মৃতি।

নদিয়ার পালপাড়ার ঢোল পরিবারের ভোলানাথ ঢোলের সঙ্গে বিবাহ হয় পান্নালালের বড়দি ইন্দুমতির। সেই সূত্রেই বড়দি ইন্দুমতির শ্বশুরবাড়িতে মাঝেমধ্যেই আসতেন পান্নালাল।

এটা যে সময়ের ঘটনা তখন পান্নালাল – কিংবদন্তি পান্নালাল হয়ে উঠেছেন। সুরকার হিসেবে তাঁর বড়দা প্রফুল্ল ভট্টাচার্য তখন প্রতিষ্ঠিত। আর মেজদা ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য তো তখন বাংলা সংগীত জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্রদের একজন।

মাছ ধরতে আর ঘুড়ি ওড়াতে ভীষণ ভালোবাসতেন পান্নালাল। বড়দির বাড়িতে পান্নালালের আসার ক্ষেত্রে এই দুটো কারণ ছিল। সঙ্গে ছিল বড়দির বাড়ির শিব মন্দিরের প্রতি টান। পান্নালাল যে ভাদুড়ী বংশে জন্মেছিলেন সেই বংশে সাধনা আর সংগীত দুই-ই ছিল একেবারে পাশাপাশি। তাঁর পিতা সুরেন্দ্রনাথের কাকা ছিলেন মহান যোগী ভাদুড়ী মহাশয় অর্থাৎ পরমহংস মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ। এই মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের রচিত ও সুরারোপিত গানের মুগ্ধ শ্রোতা ছিলেন স্বয়ং রামকৃষ্ণ। কাকা নগেন্দ্রনাথের মতো অসাধারণ গান গাইতেন ননীলাল ভাদুড়ী এবং সুরেন্দ্রনাথও। এই ননীলাল ভাদুড়ীই পরবর্তী সময়ের সিদ্ধ যোগী ধ্যানপ্রকাশ ব্রহ্মচারী। এই বংশের কেউ বর্ধমান মহারাজার কাছ থেকে তাঁর পাণ্ডিত্যের কারণে ভট্টাচার্য উপাধি পান। সুরেন্দ্রনাথ এই ভট্টাচার্যই ব্যবহার করতেন। বংশের ধারায় এই সংগীত এবং ভক্তি – দুটোর টানই পান্নালালের মধ্যে ছিল। আরও একটি কারণে পান্নালাল এখানে আসতে চাইতেন। সেটি হলো তাঁর বড়দির হাতের অসাধারণ আমিষ ও নিরামিষ রান্না।

একবার এখানে এসে বেশ কিছুদিন ছিলেন পান্নালাল। সেই সময় একদিন বড়দির বাড়ির পুরনো শিব মন্দিরে সকলের অনুরোধে গান গাইতে বসেন পান্নালাল। তাঁদের অনুরোধে একের পর এক শ্যামা সংগীত গাইতে থাকেন পান্নালাল। মুগ্ধ হয়ে যান সকলে।

এরপর ঘটে এক আশ্চর্য ঘটনা। এই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে পান্নালাল ভট্টাচার্যের বড়দা, সুরকার প্রফুল্ল ভট্টাচার্যের দৌহিত্র ড. শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সেদিন শ্যামা সংগীত গাইতে গাইতে হঠাৎ ভাবের জগতে চলে যান আমার ছোট দাদু। গান শেষে সবাই দেখেন – ছোট দাদুর শরীর অদ্ভুত উজ্জ্বল! যেন আলো শরীরের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে। স্বাভাবিকভাবেই সেদিন অবাক হয়েছিলেন সবাই। কিন্তু এর ব্যাখ্যা কেউই সেদিন খুঁজে পাননি।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments