eaibanglai
Homeএই বাংলায়বালি পাচার মামলায় হাওড়া থেকে গ্রেফতার কলকাতার ব্যবসায়ী

বালি পাচার মামলায় হাওড়া থেকে গ্রেফতার কলকাতার ব্যবসায়ী

নিজস্ব সংবাদদাতা,কলকাতাঃ- বালি পাচার মামলায় রাজ্যে প্রথম গ্রেফতার। বৃহস্পতিবার হাওয়ার বালি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে কলকাতার ব্যবসায়ী অরুণ শরাফকে। জি ডি মাইনিং নামে সংস্থার প্রধান অরুণ শরাফ। সল্টলেক ও বেহালায় তাঁর বাড়ি ও অফিস রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল অরুণকে। বিকেল প্রায় পাঁচটা নাগাদ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে প্রায় ৭৮ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডি।

প্রসঙ্গত দীর্ঘ দিন ধরেই রাজ্যে বালি পাচার মামলার তদন্ত করছে ইডি। গত সেপ্টেম্বর মাসে এই মামলায়,সল্টলেক, ঝাড়গ্রাম পশ্চিম মেদিনীপুর সহ রাজ্যের মোট ২২ টি জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। অভিযোগ বৈধ খাদান থেকে অবৈধভাবে বালি তুলে কিউআর কোড স্ক্যান করে ও ক্যারিং ওর্ডার জালিয়াতি করে বেশি দামে তা বিক্রি করা হতো। এক ফলে রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছিল।

প্রসঙ্গত বালি তোলার জন্য যে সরকারি অনুমতি নেওয়া হয় তাকেই বলে ক্যারিং অর্ডার(সিও)। সেক্ষেত্রে যে লরি বা বাহনে বালি বহনের অনুমতি দেওয়া হয় তার নম্বর নথিতে উল্লেখ থাকে। কিন্তু বেআইনিভাবে ওই একই গাড়ির নম্বর ব্যবহার করে একাধিক লরিতে করে তা পাচার করা হতো। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতি চলছিল বলে অভিযোগ। অনেক ক্ষেত্রে আবার বালি তোলার অনুমতি পত্রে কিউ আর কোড থাকত। অভিযোগ সেই কিউ আর কোড জাল করেও অবৈধভাবে বালি তোলা হতো।

অন্যদিকে বালি পাচারের অবৈধ কালো টাকা সাদা করার জন্য বিভিন্ন বিমা কোম্পানি ও শেল কোম্পানিতে খাটানো হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। এমনকি এই টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগও উঠেছে। ওই মামলায় ৭৮ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে ইডি। পাশাপাশি তল্লাশিতে এখনও পর্যন্ত ২৯ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে বলেও দাবি।

কিন্তু কীভাবে খোঁজ পাওয়া গেল অরুণের সংস্থার। জানা গিয়েছে, অরুণের সংস্থা বালি খাদান লিজে বালি নিয়ে ব্যবসা করে। সেই মতো ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর চেকপোস্ট এলাকায় সুবর্ণরেখা নদী থেকে বালি তোলার অনুমতি পেয়েছিল অরুণের সংস্থা। সম্প্রতি স্থানীয় চোরচিতা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভামাল গ্রামের অমরজিৎ বেরা ও নোটা গ্রাম পঞ্চায়েতের আশকলা গ্রামের দুখীরাম বাগ নামে দুই লরি চালককে জাল ক্যারিং ওর্ডার দেখিয়ে বালি পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করে নয়াগ্রামের পুলিশ। পরে তারা ছাড়া পেলেও তাদের জেরা করেই বালি পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য় মেলে বলে জানা গেছে। জাান গেছে এই চক্রে যুক্ত রয়েছে ‘এস কে রায় নির্মাণ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে আরও একটি সংস্থা যার মালিক সৌরভ রায়। সামনে এসেছে আরও একটি নাম শেখ জাহিরুল। তিনি অরুণের জি ডি মাইনিং সংস্থার কর্মী এবং গোপীবল্লভপুরের নয়াবসান্তের বাসিন্দা। সুবর্ণরেখা নদীর ধারে প্রাসাদপ্রম বাড়ি রয়েছে তার। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি একসময় জাহিরুলের সাইকেল রিপেয়ারিংয়ের দোকান ছিল। পরে তিনি বালিখাদানের কাজে যুক্ত হন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসে সৌরভ রায় ও শেখ জাহিরুলের বাড়িতেও অভিযান চালিয়েছিল ইডি।

অন্যদিকে ধৃত ব্যবসায়ী অরুণ শরাফের আইনজীবী দাবি করেছেন, যে সময়ে এই দুর্নীতি নথিভুক্ত হয়েছে এবং এফআইআর হয়েছে, সে সময়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন না অরুণ। তাই এই দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর যোগের সম্ভাবনাও নেই। এছাড়া টাকা উদ্ধারের কথাও অস্বীকার করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যে অবৈধ বালি পাচার মামলার তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। অবশেষে ব্যবসায়ীর গ্রেফতারি এই সংক্রান্ত তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments