নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- কার্তিক শেষ, শুরু হয়ে গেছে অগ্রহায়ণ মাস। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুসারে শীত পড়ে গেছে সপ্তাহখানেক হয়ে গেল। শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। আর শীত মানেই রংবেরঙের শাক সবজিতে ভরা বাজার। এই সময় শীতের সবজি উঠতে শুরু করায় সবজির দামও থাকে সাধ্যের মধ্যে। ফলে শীতের সকালে ব্যাগ ভরে টাটকা শাক সবজি কেনা যায় সহজেই। কিন্তু চলতি মরশুমে ধরা পড়েছে এক অন্য চিত্র। হাটে বাজারে শীতের সবজির দেখা মিললেও দাম এতটাই বেশী যে তা ছোঁয়া যাচ্ছে না। রংবেরঙের সবজি দেখে প্রায় খালি ব্যাগ হাতে ফিরতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত বাঙালিকে। কারণ হিসেবে বযবসায়ী জানাচ্ছেন সবজির যোগানের টান। আর তাতেই দাম আকাশ ছুঁয়েছে। অন্যদিকে কৃষকদের দাবি রোগ পেকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সবজি। ফলে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী যোগান দেওয়া যাচ্ছে না।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই দুর্গাপুর শহর ও গ্রামীণহাট দুই জায়গার বাজারেই সবজির যোগানে টানের বিষয়টি সামনে এসেছে । কাঁকসা, দুর্গাপুর ফরিদপুর ও শহরের বিভিন্ন প্রান্তের ছোট ছোট সবজি বাজারে প্রতিদিন সবজি বিক্রি করেন কাঁকসা ও দুর্গাপুর ফরিদপুরের চাষীরা। শীতের মরসুমে বেগুন, মুলো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, সিম, পালং সহ নানান সবজিতে খেত ভরে থাকে। কিন্তু এ বছর চিত্র পুরো উল্টো। বিভিন্ন খেতে দেখা দিয়েছে রোগ। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফলন। ফলে জোগান দিতে পারছেন না চাষিরা। যে চাষিরা এতদিন বাজার ভরিয়ে রাখতেন, তাঁরাই এখন ক্রেতা।
স্থানীয় এক কৃষক জানালেন নানান পোকার দাপটে ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সবজি। ক্ষেত থেকে সবজি তুলে আর বাজারে পাঠানো যাচ্ছে না। তাঁর দাবি শীত এখনো সেই ভাবে না পড়ার জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সবজির ক্ষেতে কাজ করা এক কৃষক শ্রমিক জানান, পাড়া গ্রামের হাটে সবজির দাম সব সময় কমই থাকে, বিশেষ করে এই শীতের মরশুমে। কিন্তু বর্তমানে এতটাই দাম যে সবজি কিনে খেতে পারছি না।
দুর্গাপুর মহকুমার হর্টিকালচার ড দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ডঃ সৌমিত্র কোলের কাছে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,”বর্ষা লম্বা সময় ধরে চলেছে। সেই জন্য চাষিরা সময় মত সবজির রোপন করতে পারেননি। মূলত সেই কারণেই এক আকাল তৈরি হয়েছে। তবে আমাদের দপ্তর সমস্ত রকম ভাবেই চাষীদের পাশে থাকছে। চাষীদের সবজির বীজ, চারা গাছ সব প্রদান করা হচ্ছে। আমরা আশাবাদী আর এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ফলন বেড়ে যাবে এবং সবজির বাজারে দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
এদিকে সবজির এই আকাশ ছোঁয়া দাম ও আকাল নিয়ে মাথায় হাত ব্যবসায়ী, কৃষক, ক্ষেত মজুর থেকে শুরু সাধারণ মধ্যবিত্তের। কবে আবার বাজার ভরে উঠবে শীতের তরতাজা শাক সবজিতে সেই আশায় দিন গুণছেন সকলে।

















