সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- সাইবার অপরাধীদের ফাঁদে পড়ে টাকা খোয়ানোর খবর এখন নতুন কিছু নয়। সরকার, পুলিশ প্রশাসনের সচেতনতা প্রচার প্রসার সত্ত্বেও সাইবার অপরাধের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণা প্রায় নিত্য দিনের ঘটনা। তবে এবার আসানসোল শিল্পাঞ্চলে এযাবৎকালে সবচেয়ে বড় অঙ্কের সাইবার প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে। সাইবার অপরাধীদের ফাঁদে পা দিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকা খোয়ালেন রানিগঞ্জের রামবাগানের ডক্টর্স কলোনির বাসিন্দা শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ অরুণ কুমার শর্মা।
ডাঃ শর্মা জানান, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে ভাল লাভের কথা বলে তাঁকে ফাঁদে ফেলা হয়। প্রথমে মোনার্ক ভিআইপি নামে একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে তাঁকে যুক্ত করা হয়। গত ২৩ অক্টোবর রেসপন্স করেন ডাঃ শর্মা। এরপর তাঁকে একটি ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খুলতে বলা হয়। যেখানে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করতে রাজি হন এবং গুগল প্লে স্টোর থেকে মোনার্ক অ্যাপ ডাউনলোড করেন। গত ২৪ অক্টোবর তিনি প্রথমে ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। এরপর ধাপে ধাপে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি মোট ১৫ কোটি ৮৩ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। এই বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগের পরে তাঁর অ্যাকাউন্টে ২০০কোটি টাকা জমা পড়ে। কিন্তু তিনি যখন ওই টাকা তোলার চেষ্টা করেন তাঁর কাছ থেকে ১২.৫০ কোটি টাকা কমিশন হিসেবে দাবি করা হয়। তখনই তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন এবং সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে অভিযোগ দায়ের করেন। পরের দিন আসানসোলের সাইবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এর পাশাপাশি ডাঃ শর্মা জানান, এই পুরো প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করেছিলেন মোনার্ক ভিআইপি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের গ্রুপ অ্যাডমিন হিসেবে পরিচয় দেওয়া অনুশ্রী শাহ নামে একজন। ওই মহিলা বিশ্বাস অর্জনের জন্য, মোনার্ক নেটওয়ার্ক ক্যাপিটাল “সেবি ” রেজিষ্ট্রেশন নিশ্চিত করেছিলো। তার নথিও দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে ডাঃ শর্মার করা অভিযোগে ভিত্তিতে, পুলিশের তরফে (মামলা নম্বর ৭৭/২৫) ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩১৬(২)/৩১৮(৪)/৩১৯(২)/৩৩৬(৩)/৩৩৮/৩৪০(২)/৬১(২) নং ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে আসানসোল দুর্গাপুর নগরের ডিসিপি ( হেড কোয়ার্টার) ডঃ অরবিন্দ আনন্দ জানান, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে, মোটা মুনাফা পাওয়া যাবে, এই লোভ দেখিয়ে ১৫ কোটি ৮৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ মামলা করে তদন্ত শুরু করেছে।


















