সৌভিক সিকদারঃ- বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় লোকসঙ্গীত হলো পাঁচালি। বর্তমান ডিজিটাল যুগে এর জনপ্রিয়তা এতটুকুও কমেনি। আজও পাঁচালি সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে মহিলাদের, টানে। পাঁচালির মত জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জীর মস্তিষ্ক প্রসূত কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রভৃতির মত রাজ্যে প্রচলিত নারী-কেন্দ্রিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি। এবার সেইসব প্রকল্পগুলি মহিলা নেতৃত্বের পরিচালনায় প্রচারের মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।জানা যাচ্ছে জেলা সভাপতিদের নেতৃত্বে ১৭ থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির পর ২১ ডিসেম্বর থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত তৃণমূল স্তরে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিতে প্রতিটি বুথে ন্যূনতম তিনটি করে সভার আয়োজন করা হবে।
লোক ছন্দে গাঁথা ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ শুধু নিছক একটি গান নয়। এই গানের মধ্য দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস শুধু উন্নয়নের কথা না বলে উন্নয়ন মানে যে শুধু পরিসংখ্যান নয়, উন্নয়ন মানে মানুষের সম্মান, নিরাপত্তা আর দৈনন্দিন জীবনের নিশ্চয়তা।
তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে পাঁচালির প্রতিটি স্তবক নারীকল্যাণ, সামাজিক সুরক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি, কর্মসংস্থান প্রভৃতি দিকগুলো সংযত ও সরল ভাষায় তুলে ধরেছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বিশ্বাসযোগ্য ভাবে ফুটে উঠেছে।
“বাংলার ঘরে ঘরে কন্যাশ্রীর আলো”- এই লাইনটি কবিতার মতো শোনালেও, আসলে তা বহু ঘরের অভিজ্ঞতার প্রতিফলন। প্রশাসনিক উদ্যোগগুলো এখানে মানবিক রূপ পায়।
এখানে নাই কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণ, পরিবর্তে আছে উন্নয়নের কাহিনী। এই শান্ত অথচ নীরব আত্মবিশ্বাস গানটির মধ্যে আলাদা শক্তি এনে দেয়।
পাঁচালির সংস্কৃতির অংশে ধরা পড়েছে লালনের সুর, দুর্গাপুজো, দোল আর ঈদ- সবকিছু একই চাঁদকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, বাংলার উন্নয়ন কখনই তার আত্মা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।
পাঁচালির সুর ও ভাষা- দুটোই এমনভাবে তৈরি যে গানটি গ্রামেও মানানসই, আবার ডিজিটাল মাধ্যমেও সমানভাবে কার্যকর। এই সর্বজনগ্রাহ্যতাই ‘উন্নয়নের পাঁচালি’র বড় অর্জন। উন্নয়নের পাঁচালি বাংলার মা-মাটির কাছে নত হয় এবং প্রতিটি পঙ্ক্তি মানুষকে উৎসর্গ করে। শুরু যেমন মানুষ দিয়ে, শেষও তেমনই মানুষেই।
আসলে তৃণমূলের ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ বড় হওয়ার কথা বলে না, ইতিমধ্যেই তা বড় হয়ে গিয়েছে সেটা নীরবে দেখিয়ে দিয়েছে।



















