অঙ্কিতা চ্যাটার্জ্জী, আসানসোলঃ- অস্বীকার করার উপায় নাই মোবাইল কালচার আধুনিক প্রজন্মের একটা বড় অংশকে গ্রাস করে ফেলেছে। সমাজ সংসার ভুলে তাদের চোখ আটকে থাকে মোবাইলের স্ক্রিনে। প্রকৃতির সৌন্দর্যের সঙ্গে তাদের গড়ে উঠেছে বৈরিতার সম্পর্ক। তারই মধ্যে নিজেদের স্বাতন্ত্রতা বজায় রেখেছে একদল সাংস্কৃতিক প্রেমী যুবক যুবতী। মোবাইলের শত প্রলোভন থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখে গত আট বছর ব্যাপী ‘প্রত্যয়ী’-র হাত ধরে আসানসোলের সাংস্কৃতিক পরিচিতিকে তুলে ধরার মরিয়া প্রচেষ্টা সফলভাবে চালিয়ে যাচ্ছে তারা। ওদের সৌজন্যে এলাকাবাসী অর্ণব মুখোপাধ্যায় রচিত ও নির্দেশিত ‘বিশ্ব মিত্তিরের পৃথিবী’ উপভোগ করার সুযোগ পেলেন। যদিও ব্যক্তি এখানে বড় ওঠেনি, ‘প্রত্যয়ী’-র মধ্যেই ওরা মিলিতভাবে ধরা পড়েছেন।
নিজেদের ছাত্রজীবনে বিদ্যালয়ের মঞ্চে পরিবেশিত নাটকে এরা অংশগ্রহণ করলেও এই প্রথম এতবড় একটা মঞ্চে শিল্পীরা অভিনয় করলেন। এরা নতুন। এদের একাগ্রতা ও শেখার ইচ্ছে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে দিয়েছে। মঞ্চের সামনে উপস্থিত দর্শকরা প্রবল ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে ৭০ মিনিট ধরে তাদের পরিবেশিত নাটক উপভোগ করে গেছেন। পেশাদার শিল্পীদের মত প্রত্যেকেই নিজ নিজ চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।
কাহিনীর মধ্যে বাস্তব পৃথিবীর বৈপরীত্য ভরা বাস্তবতা ধরা পড়েছে। নাটকের কাহিনী দর্শকদের ভাবতে বাধ্য করবেই। চরিত্রগুলো সবার খুব পরিচিত, আসলে ছায়া। দেখলে নিজের চরিত্র বলে মনে হবে। আরও নতুন চরিত্র খুঁজে পাবেন।নাটকে নতুনদের স্বাভাবিক অভিনয় দেখে মুগ্ধ হতেই হবে।
‘বিশ্ব মিত্তিরের পৃথিবী’-তে বিভিন্ন চরিত্রে রূপদান করেছেন জয়দেব, দীপঙ্কর, ঋত্বিক ও আস্তিক, মেঘনা ও তুলিকা, শান্তনু, দেবযানী ও মৌ।
এই প্রথমবারের জন্য এতবড় একটা মঞ্চে বহু দর্শকের সামনে অভিনয় রলেন মেঘনা ব্যানার্জ্জী। তিনি বললেন, প্রথমে একটু চাপে ছিলাম। তারপর সব দূর হয়ে যায়। একই সুর শোনা যায় তুলিকার কণ্ঠে।
অর্ণব বাবু বললেন, লক্ষ্য আসানসোলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রাখা। কতটুকু পেরেছি তার বিচারের ভার দর্শকদের উপর ছেড়ে দিলাম।
‘প্রত্যয়ী’-র শিল্পীরা যে ঐতিহ্য ধরে রাখবেই সেই প্রত্যয় আমাদের আছে। বেশি সংখ্যক নতুন ছেলেমেয়েরা এগিয়ে এলে আমাদের প্রচেষ্টা সফল বলে ধরে নেব। সমষ্টিগত প্রচেষ্টার বিকল্প কিছু নাই।
















