eaibanglai
Homeএই বাংলায়'কাঠগোলাপের মায়া'- নবীন কবির মায়াজড়ানো অসাধারণ কাব্যগ্রন্থ

‘কাঠগোলাপের মায়া’- নবীন কবির মায়াজড়ানো অসাধারণ কাব্যগ্রন্থ

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জীঃ- কাঠগোলাপ সুন্দর মিষ্ট গন্ধযুক্ত একটা ছোট্ট ফুল। তবে শখ করে বাড়িতে কাঠগোলাপ গাছ বসানো হয়না। অথচ এর মিষ্টি গন্ধের মায়ায় মানুষের মন বারবার আটকে যায়। তাকে টেনে নিয়ে যায় অতীতের স্মৃতির আঙিনায়। ‘কল্পনায় ফিরে আসে ফেরারি অতীত’। কখনো সে ‘মায়ের কাছে শিশু হয়ে’ ফিরতে চায় অথবা কল্পনার ডানা মেলে আকাশে ঘুড়ি হয়ে উড়তে মন চায়। তার মন ‘ডাকপিয়নের’ স্মৃতিচারণায় মেতে ওঠে। হাতের মুঠো ফোন এসব কিছু কেড়ে নিয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে কবির প্রতিবাদী মন বিদ্রোহ করে ওঠে। ‘রঙ্গনাট্যে’ ভরপুর ধরার মিথ্যা নাটক ভাঙার জন্য ‘মহাবীর’-কে আহ্বান জানিয়ে বলেন ‘পোড়াও জঞ্জাল যত মিথ্যা সমাহার’। কবিতা আছে তাই প্রেমও আছে! কারণ ‘দারুণ প্রেমের ফাগুন হাওয়া লেগেছে অন্তরে’। ওদিকে ‘টাকার নেশায় অন্ধ হয়ে’ ছুটতে গিয়ে মনুষ্যত্ব হারিয়ে মানুষ ভুলে যায় ‘অর্থের দম্ভ ক্ষণস্থায়ী’। মাথায় থাকেনা ‘বিদায়কালে বন্ধ হয় সব কলরব’। অন্যদিকে ‘সন্তুমিয়া অল্পতেই খুশি তার হিয়া’। আমরা কি সন্তুমিএা হতে পারিনা? স্বার্থের পৃথিবীতে বিভেদ যেখানে মূল কথা সেখানে জোড়া শালিক দেখে কবির মনে হয় ‘অনেক ভাল বন্ধু ওরা জনম জনম সাথী’। আমরা কি ওদের মত হতে পারিনা! নবীনের দল প্রতি আহ্বান জানিয়ে কবি লেখেন ‘ওঠো এবার সামনে চলো’ কারণ ‘আনতে হবে জয়’। এরই মাঝে পৃথিবীর আনাচেকানাচে ছড়িয়ে থাকা দোয়েল-কোয়েল সহ নানান ‘পাখ-পাখালির গল্প’ মনের মধ্যে ভিড় করে। সেই গল্পের পথ অনুসরণ করে আসে ‘নাড়ি কাটা-ধন’ সন্তানের কথা। মনে পড়ে যায় নিজের হারিয়ে যাওয়া মায়ের কথা ‘তোমায় ছাড়া জীবন আমার মরুভূমির মত’। জীবনের নানান ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও ‘মিথ্যা অহংকারে নিজেকে বিকিয়ে দিতে’ কবি রাজী নন। ধরা পড়ে ‘টিকটকেতে’ মেতে ওঠা আধুনিক যুগের টোনা-টুনির গল্প। অবশেষে অনেকটা পথ অতিক্রম করে ‘বিকেলের আলোয়’ ক্লান্ত কবির মন আটকে যায় ‘কাঠগোলাপের মায়ায়’।

একের পর এক ৫৬ টি কবিতায় নবীন কবি অনন্যা হালদারের একান্ত মনের ভাবনা সর্বজনীন হয়ে ফুটে উঠেছে তার প্রথম ‘কাঠগোলাপের মায়া’ কাব্যগ্রন্থে যেখানে প্রতিটা কবিতা নিঃশব্দ দিন অথবা নির্ঘুম রাতের দীর্ঘ এক একটা প্রহর। আছে দীর্ঘশ্বাস, নিঃসঙ্গতার বিরহ, প্রেমের অনুপম আকুলতা, শিশুতোষ ভাবনা আর কিছু সমাজ-চিন্তক প্রতিবাদ। প্রতিটি কবিতা ভিন্ন রস ও স্বাদে ভরপুর। আসলে এটা আবেগের জমাট মুহূর্ত কবি হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে এসেছে। কবির ভাবনার জালে নবীন প্রজন্মও ‘কাঠগোলাপের মায়া’-য় আটকে যাবে।

সবমিলিয়ে বলা যেতেই পারে ‘কাঠগোলাপের মায়া’-য় কবির আঁকা শব্দগুলো পাঠকের অনুভবে ছায়া ফেলবেই।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments