eaibanglai
Homeএই বাংলায়সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জোর কদমে চলছে নাড়া পোড়ানো

সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জোর কদমে চলছে নাড়া পোড়ানো

সংবাদদাতা,বীরভূমঃ- ধান কাটার মরশুম শেষ হতেই বীরভূমের ইলামবাজার, দুবরাজপুর সহ একাধিক ব্লকে বিঘার পর বিঘা জমি জুড়ে শুরু হয়েছে নাড়া পোড়ানো। ধান উঠে যাওয়ার পর ওই সমস্ত জমিতে আলু চাষ শুরু করেন চাষিরা। তাই জমি পরিস্কার করতে প্রাচীণ ও অবৈজ্ঞানিক এই পদ্ধতি অবলম্বন করেন গ্রামের কৃষকরা। অথচ এই নাড়া পোড়ানোর জন্য একদিকে যেমন মাটির উর্বতা হ্রাস পায় অন্যদিকে বায়ু দূষণ বৃদ্ধি পায়। তাই দূষণ রুখতে নাড়া পোড়ানোর বিরুদ্ধে আইন জারি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সাধারণত ফসল (ধান) কাটার পরে শিকড়-সহ অবশিষ্টাংশ খড় রূপে জমিতে থেকে যায়। পরবর্তী ফসল চাষের জন্য জমি তৈরি করতে গেলে ফসলের এই অবশেষ তুলে ফেলতে হয়। তাতে সময় লাগে আবার মজুরি বাবদও খরচ হয়। তাই তাৎক্ষণিক লাভের জন্য জমির ফসলের অবশিষ্টাংশে আগুন ধরিয়ে দেন কৃষকরা। ফলে বিঘার পর বিঘা ক্ষেত জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। ধোঁয়ায় ভরে ওঠে পরিবেশ। যার জেরে বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়ে শ্বাসরোধকারী পরিস্থিতি তৈরি হয়। অন্যদিকে দৃশ্যমানতা কমে যায়। ফলে সড়ক দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়ে। এছাড়াও মাটির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাটির উপরিস্থ ২.৫ সেমি পর্যন্ত স্তরের উপকারী ব্যাকটেরিয়া আর ছত্রাক মরে যায়। যাতে পরবর্তী ফসলের উৎপাদনশীলতা হ্রাস পেতে থাকে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, একটন মাটি পোড়ালে মাটি থেকে বেড়িয়ে যায় — ৫.৫ কেজি নাইট্রোজেন, ২.৩ কেজি ফসফরাস, ২৫ কেজি পটাশিয়াম, ১.২ কেজি সালফার। প্রতি টন খড় পোড়ালে বাতাসে মেশে- ২ কেজি সালফার ডাই- অক্সাইড, ৩ কেজি বস্তুকণা, ৬০ কেজি কার্বন মনোক্সাইড, ১৪৬০ কেজি কার্বন ডাই অক্সাইড এবং ১৯৯ কেজি ছাই।

পশ্চিমবঙ্গ পরিবেশ দপ্তর ১৯(৫)ধারার অধীনে (বায়ূ দূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৮১)সারা রাজ্য খড় বা নাড়া পড়ানো আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। এটি অমান্য করলে জেল ও জরিমানা হতে পারে। ২একর জমির উপর ৫০০০ টাকা, ৩থেকে ৫একর পর্যন্ত ১০০০০ টাকা ৫একর বেশি হইলে৩০০০০ টাকা। অথচ সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জোর কদমে চলছে নাড়া পোড়ানো।

কৃষকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা গড়ে না ওঠায় আইন লাগু করেও এই নাড়া পোড়া নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। উঠেছে প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ। কৃষকদের নাড়া পোড়ানো থেকে বিরত রাখতে সরকারি তরফে উদ্যোগ, যেমন- আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম সরবরাহ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা না হলে তা বন্ধ করা যাবে না বলেই মনে করছেন এলাকার মানুষজন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments