নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ লোকসভা ভোট এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রচারে উত্তাপ বাড়ছে রাজনৈতিক মহলে। কোথাও শাসক বিরোধী বাদানুবাদ আবার কোথাও প্রকাশ্যে প্রার্থীর ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা ইতিমধ্যেই ঘটেছে রাজ্য জুড়ে। এহেন পরিস্থিতিতেই বুধবার বাঁকুড়া-খাঁতড়া শহরে রোড শো ও বাইক মিছিল করল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে শতাধিক কর্মী-সমর্থক বাইক নিয়ে শহরের রাজা পাড়া, মুসলিম পাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালান। বাঁকুড়া জেলায় হেভিওয়েট এই প্রার্থীকে কাছে পেয়ে আপ্লুত সাধারণ মানুষ। সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, মানুষ বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে তাঁকে আশীর্বাদ করছেন৷ অন্যদিকে, প্রচারের কাজে খুব একটা পিছিয়ে নেই বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। খোদ প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ প্রচারে হাজির হতে না পারলেও তাঁর স্ত্রী সুজাতা খাঁ স্বামীর হয়ে দাপটের সঙ্গে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সুজাতা খাঁ ছাড়াও প্রচারের ময়দানে নজর কেড়েছেন বিষ্ণুপুর জেলার কো-কনভেনার সুজিত অগাস্তি, ওন্দা মণ্ডল সভাপতি কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়, অমরনাথ শাখা সহ একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব। বুধবার সুজাতা খাঁ-র নেতৃত্বেই বিজেপি নেতৃত্ব ও কর্মীরা প্রচারে নামেন। খোল, করতাল সঙ্গে নিয়ে নিজেই জুরি বাজিয়ে বিজেপির হয়ে পুরোদমে প্রচার সারেন সৌমিত্র খাঁ-র স্ত্রী সুজাতা খাঁ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নয়, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর স্বামী সৌমিত্র খাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি জানান, বিষ্ণুপুরের জনগন সৌমিত্র খাঁকে চেনেন, জানেন এবং সেটা ১২ই মে ভোট বাক্স প্রমাণ করে দেবে। অন্যদিকে প্রচারের আঁচ যখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তখন আসানসোলের বারাবনি কেন্দ্রে প্রচারে গিয়ে আক্রান্ত হলেন সিপিআইএম প্রার্থী গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জী। জানা গেছে, মঙ্গলবার আসানসোল লোকসভার সিপিআইএম প্রার্থী গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জী ভোট প্রচারে গিয়েছিলেন বারাবনি কেন্দ্রের মদনপুর গ্রামে। সেখানে পৌঁছানো মাত্রই একদল দুষ্কৃতি তাঁর ওপর চড়াও হয়ে বলে অভিযোগ। ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূলের দিকে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে আসানসোলের একটি হাসপাতলে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনা জানাজানি হতেই পশ্চিম বর্ধমান জেলা জুড়ে সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা বিভিন্ন জায়গায় থানা ঘেরাও ও বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি চাআলায়। বিক্ষোভ দেখানো হয় অন্ডাল থানার সামনেও। সিপিআইএম নেতা প্রবীর মন্ডলের অভিযোগ, যেভাবে গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জীর ওপর হামলা করা হয়েছে তাতে তাকে পরিকল্পনা করে খুন করার চক্রান্ত ছিল বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, রাজ্যে নয় দফায় ভোট ও নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূল সভাপতি সুব্রত বক্সীর বক্তব্য, “ইতিহাস বলছে বিগত নির্বাচনগুলিতে ভোটের দফা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা যতই বেড়েছে ততই তৃনমূল কংগ্রেস একক ভাবে জয়ী হয়েছে”। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতা ঠাকুরের সমর্থনে বাগদার বৈকোলায় রনঘাট অঞ্চল হাইস্কুলের মাঠে এক কর্মী সভায় একথা বলেন সুব্রত বক্সী। তিনি ছাড়াই এই সভায় উপস্থিত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতা ঠাকুর সহ অন্যান্যরা। ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহের নাম না করে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যে বিরোধিতায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, পাঁচটি আসনের মধ্যে সবকটিতেই তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করবে।