নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে নাজেহাল বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ । মঙ্গলবার বিকেল থেকে দফায় দফায় বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আছড়ে পড়ল বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়-বৃষ্টি। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাঁকুড়ার একাধিক জায়গায় ঝড় এবং বজ্র বিদ্যুতের তীব্রতা ছিল ভয়াবহ। মঙ্গলবারের কালবৈশাখীর ঝড়ের দাপটে বাঁকুড়া বেলিয়াতোড় থানার বৃন্দাবনপুর গ্রামে বেশ কয়েকটি বাড়ির ছাদ উড়ে গিয়েছে, ভেঙে পড়েছে ইলেকট্রিক পোল এবং বাড়ির দেওয়াল। যার জেরে রাতভর বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঝড়ের তাণ্ডবে বেশ কিছু গাছও ভেঙ্গে পড়েছে। মঙ্গলবারের প্রবল কালবৈশাখীর তান্ডবে বিপর্যস্ত বেশ কিছু এলাকার সাধারণ জীবনযাপন। বহু মানুষের বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বর্তমানে তাদের ঠাই হয়েছে খোলা আকাশের নিচে। আপাতত প্রশাসনের সাহায্যের আশায় তাকিয়ে রয়েছেন তারা। বাঁকুড়া ছাড়াও দুর্গাপুর, পুরুলিয়া সহ বিভিন্ন জেলাগুলিতেও মঙ্গলবার বিকেল থেকে ঝড়-বৃষ্টির জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। বেশ কিছু জায়গায় বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছ-পালা ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগও বেশকিছুক্ষনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। একদিকে কালবৈশাখীর তান্ডব অন্যদিকে দোসর দাঁতালের তান্ডব। ঘটনাটি বাঁকুড়ার শালতোড়া রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন শালতোড়া ব্লক এলাকার শিয়াকুলডোবা গ্রামের। মেজিয়া-শালতোড়া ব্লক এলাকায় কয়েকটি আবাসিক হাতি বহুদিন থেকেই রয়েছে। অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরেই ওই হাতিগুলির মধ্যে একটি হাতি গ্রামে তাণ্ডব চালাচ্ছে। কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি যখন তখন গ্রামের ঢুকে চাল ও ফসল খেয়ে ফেলছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। এই মুহূর্তে হাতিটি শিয়াকুলডোবা জঙ্গলেই রয়েছে বলে জানা গেছে। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, বনদপ্তরকে জানিয়েও কোন কাজ হয়নি। এমনকি হাতি এলাকায় ঢোকার পরেও বনদপ্তরের পক্ষ থেকে কোনওধরণের সতর্কতামূলক প্রচার চালানো হয়নি বলে ক্ষোভ গ্রামবাসীদের। এবিষয়ে শালতোড়ার বনাধিকারিক বলেন, জঙ্গলে কর্মীরা হাতিটির উপর নজরদারী চালাচ্ছে। কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না ঘটে সেদিকে বনদপ্তরের কড়া নজর রয়েছে বলে তিনি জানান। কিন্তু বারবার হাতির হানায় মানুষ মৃত্যু, ক্ষয়ক্ষতি, বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা বাঁকুড়া জেলায় ঘটলেও এর কোনও স্থায়ী সমাধান করতে পারছে না বনদফতর। বাঁকুড়া জেলায় বনজঙ্গলের পরিমাণও তুলনামূলক ভালো, কিন্তু তাসত্ত্বেও বারবার কেন দলমার দল জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে তারও কোনও সদুত্তর দিতে পারছে না বনদফতর। ফলে বহুবার হাতির সামনে পড়ে গিয়ে গ্রামের মানুষেরও প্রাণহানি ঘটছে।