নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস। দুর্গাপুজোর নবমীর রাতের ঘটনা। ভাইয়ের সঙ্গে মেলায় ঘুরতে গিয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানার বাসিন্দা সপ্তম শ্রেনির পড়ুয়া সুজাতা মণ্ডল(১৩)। কিন্তু তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি ওই নাবালিকার। শেষপর্যন্ত দীর্ঘ সাত মাস পর মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হল নাবালিকার নরকঙ্কাল। চাঞ্চল্যকর ও হাড়হিম করা ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানার পূর্ব বয়ারসিং গ্রামের। জানা গেছে, বাসন্তী বয়ারসিং গ্রামের বাসিন্দা গোবর্ধন মন্ডলের মেয়ে সুজাতা মন্ডল কাকদ্বীপ হোষ্টেলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। ২০১৮ সালে দূর্গা পূজা উপলক্ষে স্কুল ছুটিতে বাড়ি এসেছিল সে। এরপর নবমীর রাতে ভাইকে নিয়ে স্থানীয় মাঠেই দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে বেড়াতে গিয়েছিল সে। কিন্তু সেই থেকে আর বাড়ি ফেরেনি ওই নাবালিকা। টানা দু-দিন সমস্ত জায়গায় খোঁজাখুজির পর তাকে না পেয়ে বাড়ির সদস্যরা বাসন্তী থানায় মেয়ের নামে একটি নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করে তার পরিবারের লোকজন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে বাসন্তী থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও গত কয়েকমাসে সেভাবে তদন্তে গতি পায়নি পুলিশ। গত কয়েক সপ্তাহ আগেই পুলিশ ওই নাবালিকা নিখোঁজের ঘটনায় জড়িত এক যুবককে গ্রেফতার করে। ধৃতের নাম সনাতন সর্দার ওরফে বুলেট। তাকে গ্রেফতার করে জেরা করতেই পুলিশের কাছে যে তথ্য উঠে আসে তা যেমন হাড়হিম করে দেয় তেমনি যেকোনো সিনেমার ঘটনাকেও হার মানায়। ধৃত বুলেটকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, নবমীর রাতে ওই নাবালিকা যখন তার ভাইকে নিয়ে মেলায় ঘুরছিল সেইসময় ওই যুবক তার ভাইকে বিভিন্ন অছিলায় বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে ওই নাবালিকাকে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষন করে। এরপর ওই নাবালিকা অভিযুক্ত যুবককে বাড়িতে সব জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলে অভিযুক্ত বুলেট নামে ওই যুবক তাকে খুন করে সেখানে একটি খেজুর গাছের তলায় ওই নাবালিকার দেহ পুঁতে দেয়। অভিযুক্তের দেওয়া বয়ান অনুযায়ী, পুলিশ অভিযুক্তকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানে খেজুর গাছে নিচে মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে আসে ওই নাবালিকার নরকঙ্কাল। ঘটনার আকস্মিকতায় বাকরুদ্ধ নাবালিকার পরিবার ও এলাকাবাসী। যা প্রত্যেকটা মানুষের শিরদাঁড়ায় ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। কতটা মানসিক বিকৃতি ঘটলে মানুষের মনে এইপর্যায়ের অপরাধ মাথাচাড়া দিতে পারে। বর্তমান সমাজে যেভাবে দিনের পর দিন এইধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে বর্তমান এই সমাজ মানসিকভাবে কতটা সুস্থ সেই প্রশ্নও তুলে দিয়েছে এই নারকীয় ঘটনা।