নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ একেই বোধহয় বলে “মোক্ষম জবাব”। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের “থাপ্পড় দেওয়ার” উক্তি যে মোটেও ভালো ভাবে নেননি, বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া দুই জেলায় নির্বাচনী প্রচারে এসে তা বেশ ভালোভাবেই বুঝিয়ে দিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া দুই জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পাল্টা হিসেবে নরেন্দ্র মোদী জানান, “দিদি বলেছিলেন মোদীকে থাপ্পড় মারবেন, আমি তাঁকে দিদি বলে ডাকি তাই তাঁর থাপ্পড় আমি আশীর্বাদ হিসেবেই নেবো”। এখানেই থেমে না থেকে তিনি জানান, অভিধানের সমস্ত গালাগালি হজম করার ক্ষমতা রয়েছে, দেশের উন্নয়নে কোনও গালাগালি তাঁকে আটকাতে পারবে না বলে চ্যালেঞ্জ জানান প্রধানমন্ত্রী। তবে এই বক্তব্যের আগে বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরের দুই বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে বাঁকুড়া কমলাডাঙ্গার মাঠে জনসভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার ২৫শে বৈশাখ রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথের ছবিতে মাল্যদান করে ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণের শুরু থেকেই রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নরেন্দ্র মোদী। বাঁকুড়ায় বিজেপির জনসভাকে ঘিরে দীর্ঘ টালবাহানা প্রসঙ্গে তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব বিজেপির সভা বানচাল করার সমস্ত প্রচেষ্টায় চালিয়েছে। ফনী ঘূর্নিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন না ধরা প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, দিদি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে মানতে পারছেন না, অথচ অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে দিদির কোনও আপত্তি নেই। রাজ্যের উন্নয়নে প্রধান বাধা হিসেবে রাজ্য সরকারকে তুলোধনা করে প্রধানমন্ত্রী জানান, রাজ্যে জগাই-মাধাই রাজত্ব চলছে, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বাঁকুড়া সভা শেষে পুরুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর সমর্থনে পুরুলিয়া শহরের উপকন্ঠে রায়বাঘিনি ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হেলিকপ্টার অবতরণ করতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে পুরুলিয়াবাসী। লালমাটির দেশ পুরুলিয়ায় পৌঁছেই মঞ্চ থেকে পুরুলিয়াবাসীকে সম্ভাষণ করে বক্তব্য শুরু করেন তিনি। দিদির থাপ্পড় প্রসঙ্গে পাল্টা দেওয়ার পাশাপাশি আরও সুর চড়ান প্রধানমন্ত্রী। পুরুলিয়া জনসভা থেকে তিনি জানান, “মা-মাটি-মানুষের” নাম করে রাজ্যের মানুষকে লুটছে রাজ্য সরকার। “মা” নিজের সন্তানের সুরক্ষার জন্য কাঁদছে, নির্দোষ নাগরিকদের রক্তে “মাটি” লাল হয়ে গিয়েছে| শাসকদলের পাশপাশি কংগ্রেস, ও বামেদের বিরুদ্ধেও সরব হন মোদী। কয়লা মাফিয়াদের উদ্দেশ্যে নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য, “আপনারা কালো সোনার উপর বসে আছেন, এই রাজ্যে যে সরকারই আসে তারাই কয়লা মাফিয়াদের প্রশ্রয় দিয়ে সব শেষ করছে”| তিনি জানান, ২৩মে মোদী সরকার গঠনের পর বিশেষ জলশক্তি মন্ত্রালয় গঠিত হবে, কৃষকদের অবস্থার উন্নতি ঘটবে।