eaibanglai
Homeএই বাংলায়রাজনৈতিক হিংসার বলি নেতাজী, স্বামীজি, লেনিন এবার বিদ্যাসাগর, বাকি রইলেন রবি ঠাকুর

রাজনৈতিক হিংসার বলি নেতাজী, স্বামীজি, লেনিন এবার বিদ্যাসাগর, বাকি রইলেন রবি ঠাকুর

নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ দেশে এখনও শেষ হয়নি লোকসভা নির্বাচন। আগামী ১৯শে মে সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট দিয়ে ২০১৯ লোকসভা ভোটে ইতি ঘটবে। আগামী ২৩শে মে লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা। কিন্তু এই মুহুর্তে সেদিকে দেশবাসী কিংবা রাজনৈতিক দলের আপাতত কোনও নজর রয়েছে বলে তো মনে হচ্ছে না। কারণ, বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের নতুন ইস্যু মনিষী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা কান্ড। গত মঙ্গলবার কলকাতায় অমিত শাহের সভাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলকাতা। দুষ্কৃতিদের আক্রমণের হাত থেকে রেহাই মেলে নি বিদ্যাসাগর কলেজে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যাসাগরের মূর্তিও। রাজ্যে অতীতের ট্র্যাডিশন বজায় রেখে রাজনৈতিক হিংসার কোপ পড়েছে সেই মনিষীদের মূর্তিতেই। নেতজী সুভাষ চন্দ্র বসু, লেনিন, স্বামী বিবেকানন্দের পর সেই তালিকায় বাদ গেলেন না বিদ্যাসাগরও। আর চিরাচরিত প্রথা মেনেই রাজ্যের রাজনৈতিক ঐতিহ্য মেনে মঙ্গলবার থেকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিস্তর রাজনৈতিক চাপানউতোর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রাজ্যের তাবড়-তাবড় নেতা-ব্যাক্তিত্ব, সেলিব্রিটি, বুদ্ধিজীবীগন তালিকায় বাদ যান নি সাধারণ মানুষও। আর রাজনৈতিক দলগুলি? বিদ্যাসাগর কলেজের মূর্তি ভাঙার ঘটনা ছড়িয়ে পড়তে না পড়তেই শাসক দল থেকে শুরু করে বিরোধী দলগুলি শুরু করে দিয়েছে একে ওপরের গায়ে কাদা ছোঁড়াছুড়ি। তিলোত্তমার বুকে ধিক্কার মিছিলে নজরে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত শাহ ঘটনার দায় চাপালেন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিদের ওপর বামপন্থীরা তুলে আনলেন ত্রিপুরায় লেনিনের মূর্তি ভাঙা এবং কলকাতায় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি ভাঙার ঘটনাকেও। মৌন মিছিল, ধিক্কার মিছিল, পদযাত্রা, অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদন লেখা অবধিও তা জারি রইল, কিন্তু কোনও এক অজানা কারণে ঘটনার পর ৭২ ঘণ্টা কেটে গেলেও বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় মূল অভিযুক্তরা এখনও বহাল তবিয়েতে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই তো আমাদের প্রতিবাদ, ধিক্কার, রাজনৈতিক রেষারেষি। তবে এতো গেল মনীষীদের মূর্তি ভাঙার ঘটনা, কিন্তু এখানেই শেষ নয়। সম্প্রতি লোকসভা ভোটের প্রাক্কালেই বাঁকুড়ার খাতরা শহরে পাম্প মোড়েই দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতিষ্ঠিত মূর্তি শুধুমাত্র রাস্তা সম্প্রসারনের অজুহাতে প্রকাশ্য দিবালোকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এখানেই একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে, প্রথমতঃ বার বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি, বার বার দুষ্কৃতিদের নজর কেন মনীষীদের মূর্তির দিকে পড়ছে? তাহলে এটা কী পূর্বপরিকল্পিতভাবেই অশান্তি তৈরীর এক অপপ্রচেষ্টা? দ্বিতীয়তঃ গত মঙ্গলবার কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনার পর থেকে যে ঘটনা ঘটলো বা ঘটে চলেছে সেটাও কী রাজনৈতিক সুবিধা চরিতার্থ করার জন্যই? যদি না হয় তাহলে কেন সেদিন ইন্দিরা গান্ধীর মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে রাজনৈতিক দলগুলি মুখে কুলুপ এঁটেছিল? নাকি সেই ঘটনা থেকে রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত কোনও স্বার্থসিদ্ধি হবে না বলে সবকিছু দেখার পরেও চুপ করেছিলেন রাজ্যের তাবড় তাবড় নেতা, নেতৃত্ব, বুদ্ধিজীবীগণ? তাঁরা কি একবারও ভেবে দেখেন না যে এই মহান মনিষীরা আমাদের গর্ব, তাঁদেরকে এভাবে অসম্মান করা মানে আখেরে নিজের দেশকেই অসম্মান করা। আসলে সময় বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে আমরা যেমন ফ্যাশন বা নতুন ট্রেন্ডকে অনুসরণ করি, তেমনি বর্তমানে এই রাজ্যেও কথায় কথায় দেশের মনিষী বা মহান ব্যক্তিত্বদের মূর্তি ভাঙার ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। যেই ট্রেন্ডের শেষ কোথায় কেউ জানেন না। লেনিন, স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজী সুভাষ বসু সকল মনিষীর মূর্তি ভাঙা সম্পন্ন, বাকি রইলেন কবিগুরু।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments