নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ বয়স আট বছর, বাড়ির ঠিকানায় এখনও স্পষ্ট নয় তার কাছে। খেলার ছলেই অন্ডালগামী ট্রেনে উঠে পড়েছিল সে। কিন্তু এরপর যে তার জন্য কী অপেক্ষা করছে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি বছর আটের ওই নাবালিকা। দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে উঠে পড়ে আপন মনেই খেলায় মেতেছিল সে, কিন্তু তার মাথাতেই আসেনি যে কখন ওই ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। ব্যাস, যখন বুঝতে পারল সে বিপদে পড়েছে তখন ট্রেন থেমেছে অন্ডাল স্টেশনে। রাত এগারোটা, স্টেশনে সেরকম লোকজনও নেই। একা বাড়ি থেকে এতদূরে এসে বিভ্রান্তে মতো প্ল্যাটফর্মে এদিন থেকে ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছিল ছোট্ট ওই নাবালিকা। ঠিক সেইসময় অন্ডাল ষ্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে নজর যায় রেলপুলিশের। এত রাতে অভিভাবকহীন এক নাবালিকাকে একা প্ল্যাটফর্মে ঘোরাফেরা করতে দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের, সঙ্গে সঙ্গে ওই নাবালিকাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় রেলপুলিশ। দীর্ঘক্ষন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রেলপুলিশ জানতে পারে ঘটিকাপুর বলে কোনও জায়গায় ট্রেনে চেপে সে খেলছিল, তখন ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায় সে আর নামতে পারেনি। কিন্তু রেলপুলিশের দফতরে কোনও রাত্রিবাসের জায়গা না থাকায় স্থানীয় ‘অন্ডাল পরিবার’ বলে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে রেলপুলিশের তরফে ওই নাবালিকাটিকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সেক্রেটারি সঞ্জায় সিনহা জানান, তাদের সংস্থাতেও এই মুহূর্তে মেয়েদের থাকার ব্যবস্থা নেই, কিন্তু অতো রাতে ওই নাবালিকাকে একা ছেড়ে আসতেও বিবেকে না মানায় ঝুঁকি নিয়ে নিজেদের সংস্থায় নাবালিকাটিকে আশ্রয় দেন তারা। শুক্রবার ওই সংস্থার তরফে রেলপুলিশের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে ওই নাবালিকাকে তার নিজের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। জানা গেছে, রেলপুলিশের তরফে আসানসোলের কোন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। যতদিন তার পরিবারের কোনও সন্ধান না পাওয়া যাচ্ছে ততদিন ওই নাবালিকাকে ওই সংস্থার তত্বাবধানেই রাখা হবে বলে জানা গেছে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আমাদের পাঠকদের কাছেও অনুরোধ রইল, যদি কেউ এই নাবালিকাকে চিনতে পারেন বা তার বাড়ির ঠিকানা জানেন তাহলে দয়া করে তার বাড়িতে খবর দিন অথবা অন্ডাল থানায় যোগাযোগ করুন।