নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ তৃতীয় বিশ্বের দেশ হলেও বর্তমান ভারত বর্ষ আজ পৃথিবীর যেকোনো ছোট, বড় শক্তিশালী দেশ গুলির সঙ্গে একই আসনে বসার উপযুক্ত হয়ে উঠেছে । নিত্য নতুন প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ বিশ্বের যে কোন দেশের সঙ্গে টেক্কা দিতে অগ্রগণ্য আমাদের দেশ ভারত বর্ষ । কিন্তু পৃথিবীর বৃহত্তর দেশ গুলির মত ভারত বর্ষ এখনো গরিবের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বেশি । যা যে কোন দেশের কাছে সব সময় চ্যালেঞ্জের হয়ে এসেছে । তাই ভারতবর্ষেও আধুনিকতার পাশাপাশি বর্তমানে গরীব বা অতি গরিব মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয় । এই গরিবি যখন কিছু মানুষের অর্থ আমদানির সুযোগ হয়ে দাঁড়ায় তখন তা আম জনতার কাছে অতিষ্ঠ তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় । উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে বর্তমানে এই গরিব মানুষের সুযোগ নিয়ে কিছু মানুষ সাধারণ মানুষের কাছে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করে । আদপে তারা গরিব বা সত্যি ভিক্ষাবৃত্তি করার মত অবস্থায় রয়েছেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায় । পাশাপাশি বর্তমান যুগে কিছু দুষ্কৃতী কাজের কাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষ ভিক্ষাবৃত্তির আড়ালে সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে চলেছে । ফলে একদিকে যেমন আসল গরিব বা ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন যাপন করা মানুষজন যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি দূর্বৃত্তদের পাল্লায় পড়ে সাধারণ মানুষের চরম ক্ষতি সাধন হচ্ছে । উদাহরণ হিসেবে শিল্প শহর দুর্গাপুরের ঘটনাটি তুলে ধরা যায় । বেশ কিছুদিন ধরে দুর্গাপুরের বিগ বাজারের এক্সিট গেটের সামনে বেশ কিছু ভিক্ষুক নজরে পড়ছে । গত কয়েক দিনে যারা বিগ বাজার কিংবা তার লাগোয়া কোন জায়গায় গিয়েছেন তাদের নজরে নিশ্চয়ই এই দৃশ্য ধরা পড়েছে । কী পুরুষ, কি মহিলা কোন ক্রেতা বা সাধারণ মানুষ বিগ বাজারে ঢুকতে বা বের হতে গেলেই তাদের ওপর এক প্রকার হামলে পড়ছে এই সমস্ত ভিক্ষুকরা । পরিস্থিতি এমনই যে আমজনতার পা থেকে শুরু করে পিঠের ব্যাগ বা পকেটে হাত ঢুকিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতেও পিছুপা হচ্ছে না এই সমস্ত ভিক্ষুকরা। ফলে এক প্রকার চরম হেনস্থার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিগবাজার কর্তৃপক্ষ বার বার চেষ্টা করেও ওই সমস্ত যাযাবর ভিক্ষুকদের সেখান থেকে সরাতে পারে নি। বরং মহিলা হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওই সমস্ত যাযাবররা বিগবাজারের সামনে একরকম সংসার পেতে বসেছে। কিন্তু প্রশ্ন হল এরা কারা? কোথা থেকেই বা এলো? এরা কি আদপেইভিক্ষুক? নাকি ভিক্ষাবৃত্তির আড়ালে কোন দুষ্কৃতী মুলক কাজের পরিকল্পনা নিয়ে তারা ভিক্ষাবৃত্তি করছে? কারণ এই ঘটনা প্রথম নয়, এর আগেও দুর্গাপুর তথা শিল্প শহরের আনাচে কানাচে ভিখারির ছদ্মবেশে ছিনতাই, চুরি বা কেপ মারির মত ঘটনা দুর্গাপুরে ঘটে গেছে । তাই অজানা এই যাযাবরদের হঠাৎ আগমনে শিল্প শহরে ফের একবার বিপদের আজ করছেন সাধারণ মানুষ । কারণ আদবে এরা ভিখারী নয় , যাযাবর এই সমস্ত ভিক্ষুক বেশি মানুষজন ভিক্ষার আড়ালে সাধারণ মানুষের বিপদ বাড়িয়ে চলেছে । শুধু তাই নয়, এই সমস্ত অসৎ ভিক্ষুকদের জেরে দিনযাপন করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে আসল ভিক্ষুকদের । কারণ, ঐ সমস্ত অসৎ ভিক্ষুদের জ্বালাতনে সাধারণ মানুষের জীবন এতটাই ওষ্ঠাগত যে আসল ভিক্ষুকদের ও তারা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন । ফলে জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়ছে ওই সমস্ত ভিক্ষুকদের । স্বাভাবিকভাবেই এরকম পরিস্থিতিতে দুর্গাপুরবাসী ভরসা রাখছে শিল্প শহরের পুলিশ প্রশাসনের ওপর । কারণ তাদের সজাগ দৃষ্টিই পারে শিল্প শহরে বড় কোন ঘটনা বা দুর্ঘটনা রোধ করতে। অনেকেই ভাবতে পারেন এবার গরীব ভিক্ষুকদের পেছনে খামকা হাত ধুয়ে পড়েছে সংবাদমাধ্যম। কিন্তু একবারও ভেবে দেখেছেন হঠাৎ হঠাৎ এদের আগমন এবং আচমকায় গায়েব হয়ে যাওয়ার পেছনে কারণ কী? কারণ এই যাযাবরদের প্রবৃত্তিই হল বিভিন্ন শহরে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তির নামে চুরি, ছিনতাই করা। এই সমস্ত যাযাবরদের প্রধান পেশাই হল দিনের বেলা ভিক্ষাবৃত্তি এবং সুযোগ পেলে ছিনতাই বা কেপমারি এবং রাতের বেলায় শহরের আনাচে কানাচে ছিঁচকে চুরি করে দিনযাপন করা। আরও একবার তাদের বাড়বাড়ন্তের জেরে শিল্পশহরের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে। কারণ এর আগেও দুর্গাপুরের বুকে একাধিক চুরি, ছিনতাই, পকেটমার ইত্যাদি বিভিন্ন দুষ্কৃতী মূলক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে দুর্গাপুরবাসী। ফের এই সমস্ত যাযাবরদের বাড়বাড়ন্ত আবারো একই ঘটনার আগাম সংকেত নয়তো? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।