নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ নির্মানের প্রথম দিন থেকেই বিতর্কের প্যাঁচে অন্ডাল বিমাননবন্দর। বিমানবন্দর তৈরীর প্রাথমিক ধাপে জমিজটের জেরে এলাকাবাসীদের বিক্ষোভের জেরে বিলম্ব। সেই বিতর্ক কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় দফায় অন্ডাল বিমানগরী নির্মানের পর নতুন সমস্যা তৈরী হয় বিমানবন্দরের সীমানায় হাইটেনশেন বিদ্যুতের লাইন চলে আসায়। আর এর জেরে বিমানবন্দর তৈরী হয়ে গিয়েও শুরু করা যায়নি বিমান পরিষেবা। সেই বিদ্যুতের লাইন নিয়ে দুই তরফে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে বিমান উড়ানে সবুজ সংকেত পায় অন্ডাল বিমানবন্দর। সেইমতো প্রাথমিকভাবে অন্ডাল থেকে কলকাতাগামী হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করা হয়। কিন্তু কিছুদিন যাওয়ার পর এই পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ায় এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অন্ডাল থেকে ভায়া কলকাতা হয়ে দিল্লিগামী ৩০০ আসনের বিমান পরিষেবা চালু হয়। সেইসঙ্গে ইতিহাস গড়ে অন্ডাল থেকে প্রথম উড়ান পরিষেবাও চালু হয়ে যায়। কিন্তু প্রথমদিকে এই এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে যাত্রী সংখ্যা কমবেশি হলেও কিছুদিন পর থেকেই কমতে থাকে যাত্রী সংখ্যা। ফলস্বরূপ ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে অন্ডাল থেকে বিমান তুলে নেয় এয়ার ইন্ডিয়া। ফের একবার অথৈ জলে পড়ে অন্ডাল বিমানবন্দর। এই ঘটনার পর বেশ কয়েকমাস অন্ডাল বিমানবন্দরে উড়ান পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেলেও মাঝে জুম এয়ারলাইন্সের তরফে কিছুদিনের জন্য বিমান চলাচল হলেও তাও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। এরপর দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় অন্ডাল বিমানবন্দরে সম্পূর্নভাবে বন্ধ হয়ে যায় বিমান চলাচল। এরই মাঝে বেঙ্গল অ্যাক্রোপলিসের বিরুদ্ধে অন্ডাল বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে প্রোমোটারি ব্যবসা চালানোর অভিযোগও ওঠে। এরই মধ্যে চলতি মাসেই দীর্ঘ সময় পর ফের স্পাইস জেটের হাত ধরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে অন্ডাল বিমানবন্দর। কারণ চলতি মাসেই স্পাইসজেটের উদ্যোগে দুর্গাপুর থেকে মুম্বাই সরাসরি বিমান পরিষেবা চালু করা হয়েছে। দ্রুত অন্ডাল-চেন্নাই রুটেও সরাসরি উড়ান পরিষেবা চালুব করারও চিন্তাভাবনা রয়েছে বলে স্পাইসজেটের তরফে জানা গেছে। কিন্তু দীর্ঘ ব্যবধানের পরে কয়েকদিন হল অন্ডাল বিমানবন্দরে ফের একবার উড়ান পরিষেবা চালু হলেও ফের দেখা দিয়েছে বিক্ষোভের আঁচ। শুক্রবারই অন্ডাল বিমানবন্দরের জন্য দেওয়া জমিদাতারা তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ার অভিযোগে অন্ডাল বিমানবন্দরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাদের অভিযোগ, ২০০৯ সালে অন্ডাল ও লাউদোহা ব্লকের ১১টি মৌজার মোট ২৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। জমির মালিকদের একর প্রতি সাড়ে সাত লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ, জমিদাতাদের পরিবারের একজন সদস্যের চাকরি, ভাগচাষী, বর্গাদারদের এককালীন আর্থিক সাহায্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ চাষিদের। বর্তমানে তাদের অভিযোগ, একর প্রতি সাড়ে সাত লক্ষ টাকা দেওয়া ছাড়া ১০ বছর পরেও কোনও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদে শুক্রবার তারা বিমানবন্দরের সীমানার কাটা তার উপড়ে ফেলে দেন। পাশাপাশি রানওয়ের ওপরে বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিশ্রুতি পূরণে বিমানবন্দর কর্তপক্ষ ইতিবাচক ভূমিকা না নিলে বিমান ওঠা-নামা বন্ধ করার হুমকি দিয়েছেন জমিদাতারা।
ফের জমিজটে থমকে যাবে অন্ডাল বিমানবন্দরের বিমান পরিষেবা?
RELATED ARTICLES