সঞ্জীব মল্লিক , বাঁকুড়া :
স্কুলের শিক্ষকতা থেকে তিনি অবসর নিয়েছেন বছর কয়েক হলো। কিন্তু অবসর জীবনের আলস্যকে হেলায় তুচ্ছ করে তিনি শিল্পের বিকাশে মন দিয়েছেন।তিনি বাঁকুড়ার সোনামুখীর ১৫ নং ওয়ার্ডের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ রায় । তিনি কখনো কাঠ খোদাই করে তিনি নানা অবয়ব রচনা করেছেন । আবার স্বেত পাথরকে খোদাই করে ফুঁটিয়ে তুলেছেন মা কালীর মূর্তি । কখনো আবার সুর তোলেন হাওয়াইয়ান গিটারে । সম্প্রতি কয়েক বছর আগে তিনি একটি সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি দুর্গা মূর্তি রচনা করেছেন । সেই মূর্তি ২০১৭ সালে স্থান পেয়েছিল বাঁকুড়ার এাকটি পূজো মণ্ডপে । চালচিত্র সমেত মূর্তিটি অনেকটা অক্ষরধাম মন্দিরের আদলে তৈরি।কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী তো মা দুর্গার সঙ্গে আছেই। তাছাড়া সারিবদ্ধ দেব-দেবীরা রয়েছে বেদিতে। বিকাশবাবু সৃষ্টির আপল খেয়ালেই এই মূর্তি গড়েন।কোন ব্যাবসায়িক লাভালাভের কথা বিবেচনা না করে সকালটা তার কেটে যায় ছেনি বাটালি দিয়ে কাঠ খোদাই করে। এক খন্ড কাঠ নিখুঁত রুপপায় বিকাশ বাবুর হাতে। বিকেল পেরিয়ে সোনামুখীর কাছে শাল বনের ধারে যখন সূর্য অস্ত যায় বিকাশবাবু সুর তুলেন তার গিটারে। কখনো স্বর্ণযুগের গান এমনকি উচ্চাঙ্গসংগীতও। শুধু গিটার নয় বিকাশবাবু বেহালা মাউথ অর্গানও বাজান।এক সময় ভি জি যোগ এর কাছে তালিম নিয়েছেন বিষ্ণুপুরের শান্তি রঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, গৌরাঙ্গ দেব, দেবাশীষ ভট্টাচার্যের কাছে এখনো গিটার শিক্ষা করেন। বিকাশ বাবুর কাছে অবসর জীবনটা সমবেদনার নয় সৃজনশীলতার। অবসর সময়ে তিনি যাপন করেন সুরে সৃষ্টিতে এই জীবনচর্যা হয়তো অনেকের কাছে অনুকরণীয় । তবে এবছর তার হাতের তৈরী মূর্তি কোন মণ্ডপে জায়গা পায় কিনা এখন সেটাই দেখার বিষয় । টেরাকোটার আদলে তার এই শিল্পশৈলীকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকার যদি একটু এগিয়ে আসেন তাহলে আগামী দিনে তার এই শিল্প একদিকে যেমন বিশ্বের দরবারে সমাদৃত পাবে অন্যদিকে তেমনি তার শিল্প চিরজীবন থেকে যাবে মানুষের কাছে । এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর বাসুদেব মাঝি বলেন , আমরা আগামীদিনে তার এই শিল্পশৈলীকে যাতে বাঁচিয়ে রাখা যায় তার চেষ্টা করব ।