নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া:-
দামোদরের নদী ভাঙ্গন দীর্ঘদিনের সমস্যা। প্রতিবছরই বন্যায় আতঙ্ক গ্রাস করে গ্রামবাসীদের মধ্যে। কেননা বন্যার কবলে পড়ে কয়েকশ বিঘা একমাত্র চাষযোগ্য জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেকেই একমাত্র চাষের জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এখন তাদের অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতে হয়।
এ ছবি বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী থানার রাধামোহনপুর পঞ্চায়েত, ডিহিপাড়া পঞ্চায়েত, নবাসন পঞ্চায়েতের নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষদের। তবে নদী ভাঙ্গনের ব্যাপারে অবশেষে উদ্যোগ নিয়েছে ব্লক প্রশাসন আর সেই মতো কাজও শুরু হয়ে গেছে। ইতিমধ্যেই রাধামোহনপুর পঞ্চায়েতের উত্তর নিত্যানন্দপুর গ্রামে দামোদর তীরবর্তী নদী ভাঙ্গন এর জন্য নদীর ধার বরাবর ভেটিভার ঘাস লাগানো চলছে। এই ঘাষের বিশেষত্ব হলো এই ঘাসের শেখর ৬০ থেকে ৭০ ফুট পর্যন্ত মাটির নিচে যেতে সক্ষম এবং অনেকটা জায়গা কে নিয়ে এর শেকড় বাকড় বিস্তার লাভ করে। ফলে কিছুটা হলেও নদীর পাড় ভাঙ্গা রোধ করা সম্ভব বলেই মনে করছে প্রশাসন।
বিষ্ণুপ্রিয়া হালদার, নিত্যানন্দ সরকার নামে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আমাদের নদী ভাঙ্গন দীর্ঘদিনের সমস্যা বারবার প্রশাসনকে জানানো হলেও সেইভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। প্রতিবছর বন্যার সময় প্রশাসন আসে এবং দেখে চলে যায়। তবে ভাটিভার ঘাসের মাধ্যমে নদী ভাঙ্গন কতটা রোধ করা যায় সেই প্রশ্ন উঠছে গ্রামবাসীদের মধ্যে।
এ বিষয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দেন স্থানীয় বিজেপি নেতা তাপস সরকার। তিনি বলেন এটা লোক দেখানো কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। যেখানে পাথর দিয়ে নদী বাদ দিলেও টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না, সেখানে ভাটিভার ঘাস লাগিয়ে নদী ভাঙ্গন রোধ কিভাবে সম্ভব।
এ বিষয়ে সোনামুখী ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রণব রায় সিপিএমের উপরে দায় চাপিয়েছেন। তিনি বলেন দীর্ঘ ৩৪ বছর বামফ্রন্ট সরকার রাজত্ব করলেও নদী ভাঙ্গনের ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেয়নি। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর নদী ভাঙ্গনের ব্যাপারে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। সেই মতো কাজ শুরু হয়েছে । এছাড়াও মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা সরেজমিনে খতিয়ে দেখে গেছেন। এলাকার মানুষের স্বার্থে যত দ্রুত সম্ভব সমস্যার সমাধান করবো আমরা।