নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়াঃ- দক্ষিনবঙ্গের জেলাগুলিতে লোকসভা ভোটের গেরুয়া ঝড়ে চাপে পড়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। গত আট বছরে “লাল ঝান্ডা”র লোক দেখলে হয় উপহাস নয় আক্রমন অথবা অপমান, তৃনমূল কংগ্রেসের এটাই স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এবার কিন্তু অবস্থা বদলাচ্ছে, অন্ততঃ বাঁকুড়া জেলার কিছু কিছু ব্লকে, পঞ্চায়েতে।
বাঁকুড়ার কোতলপুর সিহড়, জয়রামবাটি এলাকায় ২০১১ পরবর্তী সময়ে বারে বারে রক্তাত্ত হয়েছে সিপিএম। আবার ২০১৯ পরবর্তী সময়ে হপ্তায় হপ্তায় গ্রামে গ্রামে রক্তাত্ত হচ্ছে তৃনমূল কংগ্রেস, সিপিএম উভয়েই। অভিযোগের তীর বিজেপি’র গেরুয়া বাহিনীর দিকে। পরিস্থিতি ক্রমেই বেপরোওয়া হচ্ছে। বিশেষতঃ উগ্র গেরুয়া বাহিনী পুলিশকেও তোয়াক্কা করে না।
২০১১’র পর সিহড়ে খুন হন হিমঘর শ্রমিক অলোক বেওড়া। উপযুপরি সন্ত্রাসে কার্যতঃ নিষিদ্ধই হয়ে যায় লালঝান্ডা। সিপিএম করা পরিবারগুলিকে ডেকে ডেকে পাটি অফিসে এনে মারধর নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় সিহড়ে। কিন্তু ৩০ সেপ্টেম্বর সিহড়েরই শান্তিনাথ তলা থেকে যে ভিড়ে ঠাসা সিপিএমের মিছিল হল, তা দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে শাসক দল তৃনমূল আর বিজেপি উভয়েরই। কারন, কৃষক নেতা রামপ্রসাদ হাজরা, শ্রমিক নেতা তাপস চক্রবর্তীর নেতৃত্বে, অন্ততঃ পাঁচশো মানুষের ওই মিছিল সটান হাজির হয় সিহড় পঞ্চায়েত দপ্তরে। সেখানে, টেবিল চাপড়ে গ্রাম প্রধানের কাছে ৭৫ লক্ষ টাকার গাছ বিক্রির হিসাব চায়। প্রশ্ন তোলা হয় – ওই ৭৫ লক্ষ টাকা গেল কোথায়?
বেশ কয়েক বছর পর লালঝান্ডাধারীদের ওই মিছিল নিয়ে শাসক দল মুখে কুলুপ এঁটেছে। জেলার অন্যতম তৃনমূল কংগ্রেস নেতা অরুপ চক্রবর্তী বলেন, “বিজেপি আর সিপিএম, দুটি দলই এখন কিছু ‘কমন’ লোক নিয়ে মিটিং মিছিল করে। ওই লোকেরা আসলে কারো নয়। যার যখন দরকার পড়ে, তার হয়ে ভাড়া খাটে”। তিনি বলেন, “দাবি যদি ন্যায্য হয় , সঙ্গঁত হয়, তার জন্য কোনো ঝান্ডা নয় তথ্য প্রমান নিয়ে যে কেউই মিছিল করতে পারেন। সেটা গনতান্ত্রিক পথ। অসুবিধা কোথায়?”