সংবাদদাতা, হাওড়াঃ– বন্ধুকে ‘টা-টা বাই-বাই’ করে রাজকুমার সোনকার নামে এক ব্যক্তি দিল গঙ্গায় ঝাঁপ। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার সালকিয়া এলাকায়। এদিন সালকিয়ার বাসিন্দা পেশায় প্রমোটার রাজকুমার এক সাইটে যাবার নাম করে স্ত্রী কে বলে বাড়ি থেকে সকাল বেলায় বের হন। একই সাইটে ফ্ল্যাটের কাজ দেখতে এসে রাজকুমারের দেখা পাননি বন্ধু রীতেশ বর্মা। কিছুক্ষন পর বন্ধুর দেখা না মেলায় রীতেশ রাজকুমারের ফোনে কল করেন। কিন্তু দীর্ঘক্ষন ধরে রাজকুমার ফোন না তোলায় চিন্তিত হয়ে রীতেশ রাজকুমারের স্ত্রী কে ফোন করেন। রাজকুমারের স্ত্রী কে ফোন করার পর রীতেশ জানতে পারেন, রাজকুমার সাইটে যাওয়ার নাম করেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। তাই সন্দেহের তীর বাঁধতে শুরু করে রীতেশের মধ্যে। কারন রাজকুমার একবার বন্ধু রীতেশ কে বলেছিলেন, তার ক্যানসার ধরা পড়েছে। এবং রাজকুমার এও বলেছিলেন যে, আমি আর বাঁচতে চাই না। রীতেশের কথায়, জিভে কর্কট রোগ দেখা দেওয়ায় রাজকুমারের মাস পাঁচেক আগে এক অপারেশন হয়। প্রায় ৩২ টি রেডিয়েশন ও নেওয়া হয়েছে। তবে তৎকালীন গলার ভিতরে চরম ব্যথা অনুভব করায় মানসিক ভাবে বিদ্ধস্ত হয়ে পড়েছিলেন রাজকুমার। অন্যদিকে বেলা গড়িয়ে গেলেও রাজকুমারের খোঁজ না মেলায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে গোলাবাড়ি থানায় একটি মিসিং ডায়েরি করা হয়। এরপরেও হাওড়া কারশেড এলাকায় খোজাখুজি করলেও রাজকুমারের কোনো পাত্তা পাওয়া যায়নি। কিন্তু আচমকাই দুপুর বেলায় রাজকুমার একবার ফোনের সুইচ অন করে আর তৎক্ষনাৎ রাজকুমার কে ফোনে পেয়ে যায় রীতেশ। রাজকুমার রীতেশ কে জানায় সে দক্ষিণেশ্বর ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সেইমতো রীতেশ ও সেই স্থানে পৌঁছান। রীতেশ রাজকুমার কে বলেন, “বাড়িতে তার মা, বাবা, মেয়ে, ছেলে আছে। তাই তাদের কে ফেলে এই সমস্ত হটকারি সিদ্ধান্ত যেন না নেয় রাজকুমার কে বুঝিয়ে বলেন রীতেশ। এবং রীতেশ রাজকুমার কে বলে যে তার আসা অব্দি সে যেন সেখানেই অপেক্ষা করে। এরপর রীতেশ তার বন্ধুদের নিয়ে বালি ব্রিজের দিকে রওনা দেয়। বন্ধুদের নীচে দাড়াতে বলে রীতেশ রাজকুমারের দিকে এগিয়ে যান। রাজকুমার তখন ব্রিজের ৪ নম্বর পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে। রীতেশ কে এগিয়ে আসতে দেখে রাজকুমার বন্ধুকে ‘টা-টা বাই-বাই’ করে গঙ্গার জলে ঝাঁপ দেন। এরপর সাঁতার না জানায় রাজকুমার জলের স্রোতে তলিয়ে যান”। অন্যদিকে বালি থানার তরফ থেকে কয়েকজন সাঁতারু এসে জলে রাজকুমারের দেহ খোজাখুজি করলেও তার দেহ পাওয়া যায়নি। কারন ২৪ ঘণ্টা হওয়ার কোনো দেহই ভেসে ওঠে না। রীতেশ মনের দুঃখে বলেন, “সব শেষ হয়ে গেল বছর চারেক ধরে আমরা একসাথে প্রমোটারির ব্যবসা শুরু করি ব্যবসার মেন মাথাটাই চলে গেল”। পুলিশ বিভাগের তরফ থেকে জানানো হয়েছে জলের তোড়ে এখনও রাজকমারের দেহ মেলেনি।