মনোজ সিংহ, দুর্গাপুরঃ- বেসরকারি পন্য পরিবহন টার্মিনালে ‘দখলদার’ উচ্ছেদ নিয়ে ‘ধীরে চলো’ নীতি নিল ‘আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থা’ (এডিডিএ)। কিন্তু, কেন তার পরিকল্পনা থেকে সরে এল এ.ডি.ডি.এ. তার কোনো সরকারি ব্যাখ্যা এখনো অব্দি জানায়নি সংস্থা। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টিতে দারুন অস্বস্তিতে সংস্থারই পরিকল্পনা বিভাগের এক আধিকারিক ও তার সাঙ্গপাঙ্গঁরা। কারন, তিনি চাইলেও তড়িঘড়ি করে ‘দখলদার’ হঠিয়ে তার পেয়ারের এক প্রাক্তন কোল মাফিয়ের হাতে পার্কিং খোলার জন্য জমি তুলে দিতে পারছেন না। এদিকে, গোটা বিষয়টিতে ধন্দে পুলিশ ও। কারন, ‘দখলদার’ হঠাতে দুর্গাপুরের কোকওভেন থানা থেকে পুলিশি সহায়তা চেয়েছিল এ.ডি.ডি.এ। থানার সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ প্রস্তুত থাকলেও, হঠাৎই থমকে গেছে এ.ডি.ডি.এ।
২০০৭-র ১৯ নভেম্বর সালে, সগড়ভাঙ্গাঁ এলাকায় পালোজিক্স ইনফ্রাস্টাকচার নামে কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থাকে ২৩.৩০৬ একর জমি বরাদ্দ করে এডিডিএ। পন্য পরিবহনের টার্মিনাল গড়ে তোলার জন্য। সংস্থাটির আসল মালিক রাজ্য সরকারের এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ খনি ব্যবসায়ী ও তার সঙ্গী সাথিরা। অল্প কিছুদিন পরই সংস্থাটির হাত বদল হয়। এরপরই অভিযোগ ওঠে, পালোজিক্স সংস্থা, তাকে বরাদ্দ করা ২৩ একর জমির চেয়ে অনেক বেশি জমি দখল করে কাজ কারবার চালাচ্ছে। সেখানে মূলতঃ বাঁকুড়ার বড়জোড়া ও রানিগঞ্জ কয়লাঞ্চলের খনি থেকে লরি বোঝাই কয়লা জমা করা হয়। সেই কয়লা টার্মিনালের ভেতর রেল ইয়ার্ডে রেক বোঝাই হয়ে চলে যায় রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলিতে। পালোজিক্স থেকে হাত বদল হয়ে সংস্থাটির এখন নাম ‘টিটাগড় লজিস্টিক ইনফ্রাস্টাকচার’। দপ্তর কলকাতার সেক্সপিয়ার সরনিতে। গোড়ায় সংস্থাটির হর্তা কর্তা হিসেবে অতুল পালিওয়ালের দাপট থাকলেও, কনক ভুতুড়িয়া সহ নেপথ্যে আরো কয়েকজন এটির বড় অংশীদার হওয়ার পর এটি ‘ত্রানামুণির’ সংস্থায় পরিনত হয়। সকলেই অবাঙালী। অতুল বলেন, “আমাদের ওপর জোর জবরদস্তি করছে এডিডিএ। ওরা আমাদের জমির ভেতর অন্য একটি সংস্থাকে জমি দিয়ে দিয়েছে। রেলওয়ে ট্র্যাকের পাশে নির্মান হচ্ছে। যেটা নিরাপত্তার দিক দিয়ে বিপজ্জনক”।
ভাল কথা। তা হলে প্রশ্ন উঠতেই পারে, টিটাগড় লজিস্টিক নিজে কেন রেল লাইনের গায়ে নির্মান শুরু করেছিল? তখন রেল নিরাপত্তার কথা মাথায় আসেনি কেন? রেল ট্র্যাকের ২৫ মিটারের মধ্যে কোনো নির্মান ই থাকার কথা নয়, রেল নিরাপত্তার নিয়ম মোতাবেক।
১৮ নভেম্বর, ২০১৯ এডিডিএ বেসরকারি সংস্থাকে যে চিঠি দিয়েছিল তাতে স্পষ্ট বলা আছে, টিটাগড় লজিস্টিক বেআইনী নির্মান করছিল।