অনন্যা রায়, পুরুলিয়াঃ- এখানে চোখ সারানো হয়, আবার এখানেই চোখে আঁধার নামে। এটাই পুরুলিয়ার মুরারডি পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রামের বাস্তব ছবি। ‘চোখ থাকতেও অন্ধ’ বেশি মুরারডি’র মুরুলিয়ায়, কারন ১০ বছর বয়স হলেই শিক্ষার আলো শেষ হয় এই গ্রামে।
চোখের হাসপাতালের জন্য সাঁতুড়ি ব্লকের মুরারডি’র খ্যাতি বহু দিনের। সেই মুরারডি’রই মুরুলিয়ায় স্কুল ছুটের হার এখন জেলার সর্বাধিক। কারন, চতুর্থ শ্রেনী’র পর ওই গ্রাম বাঁ তার আশেপাশে পড়ার এর স্কুল ই নেই। আরো পড়তে চাইলে যেতে হবে আসানসোলে, প্রায় ২০ কিমি দুরে।
সংখ্যালঘু অধ্যুষ্যিত মুরুলিয়ায় ১৯৩৭ সালে ব্রিটিশ সরকার উর্দু মাধ্যমের একটি মক্তব চালু করে। সেটি’ই চতুর্থ শ্রেনী অব্দি অ বৈতনিক প্রাথমিক বিধ্যালয়। পঠন পাঠন উর্দু মাধ্যমেই। ছাত্র-ছাত্রী ৪৫ জন। “এদেরই ক্লাশ ফোর পাশ করার পর আর পড়ার সুযোগ নেই। তাই এই অঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ ই ক্লাশ ফোর পাশ”, বললেন প্রাথমিক বিধ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল হক। তিনি বলেন, “প্রায় ১৩ বছর আগে একটি উর্দু মাধ্যম জুনিয়র হাই স্কুলের অনুমোদন হয়েছিল। কাজও শুরু হয়, কিন্তু ৩ বছর ধরে থমকে আছে ভবন নির্মাণের কাজ”। পুরুলিয়া জেলা বিদ্যালয় পর্ষদ সূত্রে জানা গেছে, জমি অধিগ্রহন সংক্রান্ত সমস্যায় থমকে আছে নির্মাণ কাজ। যার জেরে, ওই অঞ্চলে বছরের পর বছর বাড়ছে স্কুল ছুটের সংখ্যা।
এদিকে, এলাকায় সত্বর প্রস্তাবিত উর্দু মাধ্যম জুনিয়র হাইস্কুলে পঠন পাঠন চালুর দাবিতে জেলা শিক্ষ দপ্তরে একটি দাবি সনদ পেশ করেছে সি পি আই(এম)। জেলা শিক্ষা দপ্তর অবশ্য জানায়, জমি জট না কাটলে, জুনিয়র হাই স্কুলের নির্মাণ কাজ এখনো মুশকিল। ফলে, রাজ্য বাসীর চোখের আলো ফিরিয়ে দিলেও, নিজের ঘরে শিক্ষার আলো আনতে অসহায় মুরারডি।