জ্যোতিষ অমলাচার্য্যঃ- জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, প্রতি আড়াই বছর অন্তর শনি তার অবস্থান পরিবর্তন করে। আড়াই বছর বাদে বাদে এক রাশি থেকে অন্য রাশিতে প্রবেশ করে শনি। প্রত্যেক মানুষের জীবনে শনির উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। যাদের জন্মছকে শনি অশুভ জায়গায় অবস্থিত, তাদের জীবন শনির প্রভাবে ছারখার হয়ে যেতে পারে। আর্থিক সমস্যা ও নানা ধরনের দুর্যোগ এদের পিছু ছাড়ে না।অনেকেই জানতে চান শনির সাড়েসাতি এবং শনির আড়াইয়া যাদের চলছে তাদের প্রত্যেকের জীবন কি বিষময় হয়ে যাবে? আসলে এই বিষয়টি এতো সরল নয়, শনির সাড়েসাতি মানে জাতক জাতিকারা দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর ধরে দুর্ভোগ করবে তেমনটা কিন্তু নয়, ওই সাড়ে সাত বছরের মধ্যে কারোর ক্ষেত্রে কোনও একটা আড়াই বছর কিংবা পাঁচ বছর দুর্ভোগ পোয়াতে হয়। আর এই সাড়েসাতি চলাকালীন জাতক জাতিকাদের জীবন একেবারে থেমে যাবে তেমনটাও কিন্তু নয়। ব্যক্তিগত জন্মছকে শনির অবস্থান, শুভত্ব যদি ভালো হয় তাহলে জাতক জাতিকাদের তেমন খুব একটা দুর্ভোগ পোয়াতে হয় না। দেখা গেছে, শনির সাড়েসাতি চলাকালীন জাতক জাতিকাদের বিয়ে হয়েছে, বাড়ি হয়েছে আবার সন্তানও হয়েছে। এইসব কিছু সম্ভব জাতক জাতিকাদের ব্যক্তিগত জন্মছকে শনির অবস্থানের উপর। বর্তমানে শনি যে রাশির উপর অবস্থান করছে সেই মকর রাশি, তার আগের ধনু রাশি এবং পরের কুম্ভ রাশি- এই তিন রাশির শনির সাড়েসাতি চলছে। এক্ষেত্রে মকর এবং কুম্ভ রাশি শনির নিজের ঘর, অর্থাৎ ওই দুই রাশির মালিক স্বয়ং শনিদেব। জ্যোতিষ শাস্ত্রনুযায়ী মকর এবং কুম্ভ শনির নিজের ঘর হওয়ায় সাড়েসাতি চললেও এই দুই রাশির উপর তেমন খুব একটা প্রভাব পড়বে না। ঠিক তেমনি শনির আড়াইয়ার ক্ষেত্রেও। মিথুন এবং তুলা রাশির আড়াইয়া শুরু হয়েছে। অনেকের প্রশ্ন, এই আড়াই বছর পুরোটাই কি খারাপ যাবে? না তা যাবে না, ব্যক্তিগত জন্মছকে শনি কি অবস্থায় আছে তা একজন অভিজ্ঞ জ্যোতিষী বলতে পারেন। সেক্ষেত্রে ব্যক্তিগত জন্মছকের নবতারাচক্র করে দেখলেই বোঝা যাবে শনি সম্পদ, বিপদ, বদ, মিত্র ইত্যাদি কোন নক্ষত্রে অবস্থান করছে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ছক অনুযায়ী যদি দেখা যায় বর্তমানে মকর রাশিতে যে নক্ষত্রে শনি অবস্থান করছে সেটি আপনার ক্ষেত্রে বিপদ নক্ষত্র তাহলে অবশ্যই খারাপ যাবে, যতদিন শনি ওই নিদিষ্ট নক্ষত্রে থাকবে| তাছাড়া যাবে না। একইভাবে সাড়েসাতির সময় শনি কোন নক্ষত্রের উপর দিয়ে পাশহচ্ছে তার উপরই নির্ভর করবে দুর্ভোগের কমবেশি। তবে এটা ঠিক, যে সব রাশির উপর শনির কুদৃষ্টি পড়বে সেইসব জাতক জাতিকার জীবনে দুঃখ-কষ্ট, অর্থ কষ্ট বা অন্যান্য সমস্যা দেখা দেবে। আমরা সবাই জানি, শনি মহারাজ কর্মফলদাতা, ন্যায়ের দেবতা| যে যেরকম কর্ম করবে শনিদেব তাকে সেইরকম ফল দেবেন। সেক্ষেত্রে বলা হয়েছে, শনিদেব যার উপর সন্তুষ্ট হন তাকে রাজা বানিয়ে দেন আবার যার উপর কুপিত হন তার কাছ থেকে সব নিয়ে পথের ভিখিরি বানিয়ে দেনঅতএব শনির এই সাড়েসাতি এবং আড়াইয়া নিয়ে বৃথা দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই, বরং একজন অভিজ্ঞ জ্যোতিষীর পরামর্শ নিন। তিনিই সঠিক পথ দেখাতে পারেন।