নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমানঃ- নিখোঁজ স্ত্রীর সন্ধান পেতে শ্বশুরবাড়ির দরজা আটকে অনশনে বসলেন স্বামী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে বর্ধমানের সরাইটিকর দক্ষিণপাড়া এলাকায়। ভ্যালেনটাইন ডে-র দিনেই নজীরবিহীন এই আন্দোলনে নামায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সরাইটিকর এলাকারই বাসিন্দা পেশায় টোটো চালক সেখ রেজাউল শুক্রবার সকাল থেকেই শ্বশুরবাড়ির দরজার সামনে স্ত্রীর ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তাঁর স্ত্রীকে ফেরতের দাবী জানানোর ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে তাঁর সমর্থনে এগিয়ে আসেন গ্রামের একাংশও। তাঁরাও এদিন রাস্তায় হাতে প্লাকার্ড নিয়ে রেজাউলের স্ত্রী নাসরিনা খাতুনকে ফিরিয়ে দেবার দাবী জানান। গ্রামবাসী সেখ মঞ্জুর জানিয়েছেন, তাঁরাও তৃণমূল পার্টি এবং গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন কিন্তু রেজাউলের শ্বশুর সেখ রফিক তাতে রাজী হননি। তাঁরাও চান সেখ রফিক তাঁর মেয়েকে ফেরত দিক রেজাউলের কাছে। রেজাউল জানিয়েছেন, পেশায় তিনি টোটো চালক। প্রায় ৬ বছর ধরে তিনি প্রেম করেছেন নাসরিনের সঙ্গে। কিন্তু নাসরিনের বাবা কিছুতেই তা মেনে নিচ্ছিলেন না। এই অবস্থায় গত ২৪জানুয়ারী তিনি নাসরিকে বিয়ে করেন। বিয়ের খবর পেয়ে নাসরিনের বাবা সেখ রফিক তাঁর মেয়েকে বাড়িতে ডেকে পাঠান। যেহেতু তাঁদের বিয়ে হয়ে গেছে তাই তিনি নির্দ্বিধায় নাসরিনকে তাঁর বাপের বাড়িতে পাঠান। কিন্তু তারপর থেকে আর নাসরিনকে আর কোনো যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাঁর মোবাইল ফোনটিও ভেঙে ফেলা হয় বলে এদিন রেজাউল অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁর স্ত্রীকে মারধর করা হয়েছে। এমনকি গত কয়েকদিন আগে বাড়িতে তালা মেরে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন কোথায় চলে গেছেন কিছুই হদিশ করতে পারছেন না। গত ৭ ফেব্রুয়ারী থেকে তাঁর স্ত্রীর কোনো খোঁজই তিনি পাচ্ছেন না। এব্যাপারে বর্ধমানের মহিলা থানায় তিনি অভিযোগ জানাতে গেছিলেন। কিন্তু তাঁর শ্বশুর সেখ রফিক জানান, তিনি সবকিছু মেনে নেবেন, কোনো অভিযোগ করতে হবে না। তাই তিনি আর কোনো অভিযোগ জানাননি বলে জানিয়েছেন সেখ রেজাউল। তাই বাধ্য হয়েই তিনি শ্বশুরবাড়ির দরজার সামনে তাঁর স্ত্রীকে ফিরিয়ে দেবার দাবীতে অনশনে বসেছেন। তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘ ৬ বছর ধরে তিনি ভালবেসেছেন নাসরিনকে। তাই তিনি তাঁর স্ত্রীকে ফেরত চান এই ভ্যালেনটাইনের দিনেই। যদিও এব্যাপারে সেখ রফিকের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা যায়নি।