নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ- রাজ্যের পুলকার অ্যাসোসিয়েশনগুলি পুলকার ধরপাকড় বিরুদ্ধে এক জোট হয়ে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যজুড়ে। সম্প্রতি রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী মাননীয় শুভেন্দু অধিকারী মহাশয় জানান ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্ত পুলকারের ব্যাক্তিগত নাম্বার বদলে তা বাণিজ্যিক নম্বরে বদলে ফেলতে হবে, না হলে বাজেয়াপ্ত করা হবে গাড়িগুলিকে। ১০ বছর পুরনো যে পুলকারের তা আর পুলকার হিসাবে ব্য়বহার করা যাবে না। । পুলকার মালিকদেরকে রোড ট্যাক্স সহ সমস্ত কাগজপত্র আপ-টু-ডেট করতে হবে । এই নির্দেশিকার পরেই দুর্গাপুর – আসানসোল পুলকার অ্যাসোসিয়েশনের মিলিত একটি বৈঠক হয় ৷ সেখানে তারা স্থির করেন, যদি ২৬ তারিখে কোন রকম ধরপাকড় করে গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয় তাহলে তারা গোটা রাজ্যের সব পুলকার বন্ধ করে দেবেন । বৃহত্তর আন্দোলনের পথেই হাটবে আসানসোল , দুর্গাপুরসহ রাজ্যের পুলকার অ্যাসোসিয়েশনগুলি । দুর্গাপুর – আসানসোল পুলকার অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, অন্যান্য পরিষেবা প্রদানকারী গাড়ির যেমন মিনিবাসের কাছে রাজ্যসরকার নামমাত্র পরিষেবা কর আদায় করে ,সেখানে পুলকার চালিয়ে তাদেরকে অনেক বেশি টাকা কর সরকারকে দিতে হচ্ছে । মিনিবাস মানুষকে পরিষেবা দেয়, পুলকারও তো পরিষেবা দেয়? সরকারের এই বিমাতৃসুলভ আচরণ কেন? দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে প্রায় ১৫০০ পুলকার গাড়ি চলাচল করে বলে জানা গেছে। এক পুলকার মালিক জানান, তারা পড়ুয়াদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার ভেতরে মাসিক ভাড়া নেন স্কুলে দিয়ে আসা ও নিয়ে আসার জন্য। এই অল্প টাকাতে বৈধ কাগজপত্র বানিয়ে গাড়ি চালাতে হলে ভাড়া আরো বৃদ্ধি করতে হবে সে ক্ষেত্রে অভিভাবকরা সেই ভাড়া দিতে চান না। অন্যদিকে স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা জানান যে তারা পুলকার গুলিকে যে টাকা দেয় তা যথেষ্ট তার পরেও যদি পুলকার এরা ভাড়া বৃদ্ধি করে তাহলে তারা অন্য পথ বেছে নেবেন। দুর্গাপুর শহর জুড়ে রয়েছে কয়েকশো টোটো বা ই-রিক্সা। পরিবেশ বান্ধব হওয়া এই ই-রিক্সা/ টোটো গুলিকে এবার অভিবাবকদের প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। এক গৃহবধূ সোনালী সরকার জানান ” আমরা বাচ্চাদেরকে ঐরকম পুলকারে দিতে ভয় পায়। গাদাগাদি করে বাচ্চাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়। সবসময় উদ্বিগ্ন হয়ে চেয়ে থাকতে হয় রাস্তার দিকে। তারপরও যদি পুলকার গুলি তাদের ভাড়া বৃদ্ধি করে তাহলে আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করব সমস্ত স্কুলে ই-রিক্সা চালু করার জন্য। একদিকে যেমন পরিবেশবান্ধব এই ই-রিক্সা গুলি তেমনি কম খরচে অল্প ছাত্রছাত্রীকে নিয়েই ই-রিক্সা গুলি স্কুলে নিয়ে যাওয়া আসা করতে পারবে। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের রাস্তাঘাট রাজ্যের অন্যান্য শহর থেকে অনেক ভালো শুধু প্রয়োজন দুর্গাপুর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একটু সহায়তা। যদি সেই সহায়তা টুকু স্কুল চলাকালীন সময়ে পাওয়া যায় তাহলে এই ই-রিক্সাতেই আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদেরকে স্কুলে পাঠাতে পারব। যদি এরকম করা সম্ভব হয় তাহলে শহরে যেমন দূষণের মাত্রা কমবে তেমনি পুলকার গুলির দাদাগিরি ও অনেকটা কমে যাবে। ”
একদিকে রাজ্য প্রশাসনের কড়া সিদ্ধান্ত পুলকার গুলিকে নিয়ে অন্যদিকে ছাত্র-ছাত্রীরদের অভিবাবকরা সরকারের পক্ষে যাওয়াই পুলকার অ্যাসোসিয়েশনের এই হুমকি যে কতটা কার্যকরী হবে তার এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।