সংবাদদাতা, লাউদোহাঃ- লাউদোহার পানশিউলি উচ্চ বিদ্যালয় এখানে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬২৬ জন। লাউদোহা ও পাণ্ডবেশ্বর এলাকার মোট তিনটি বিদ্যালয় এর ছাত্র-ছাত্রীরা এবারে এখানে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। এখানে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যতিক্রমী পূর্ণিমা। শারীরিকভাবে প্রায় ৯০% অক্ষম। তবুও মনের জোর তাকে নিয়ে এসেছে পরীক্ষাকেন্দ্রে। বড় হয়ে সে চাকরি করতে চাই। পূর্ণিমার বাবা সুরেশ বাউরী জানান, পাণ্ডবেশ্বর এর জল ভাঙ্গা এলাকায় তাদের বাড়ি দিন মজুরি করে চলে তাদের সংসার। শারীরিকভাবে অক্ষম তাদের মেয়ে হাঁটতে চলতে একেবারেই পারেনা, তবুও সেই চায় পড়াশোনা করে বড় হতে। তাই তার চাওয়া-পাওয়াকে মূল্য দিতেই কষ্ট করে তার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন তার মা-বাবা। পূর্ণিমার টিউশনি পড়তে যাওয়া থেকে শুরু করে স্কুলে যাওয়া সমস্ত কিছুই তাকে সাইকেলে করে নিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসছেন তার বাবা।
সুরেশবাবু জানান কোনরকম সরকারি সাহায্য তারা পাননি থেকে কোন সাহায্য পান তাহলে তাদের মেয়ের পড়াশোনা চালাতে তাদের কষ্ট পেতে হয় না। পানশিউলি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জীবনকৃষ্ণ কুন্ডু মহাশয় জানান, বিগত পরীক্ষা গুলিতে তিনি পূর্ণিমা যে ক্লাসে পরীক্ষা দিচ্ছে সে ক্লাসে পরিদর্শক ছিলেন, তখন তিনি দেখেছিলেন পূর্ণিমা অবলীলায় সুন্দরভাবে পরীক্ষার খাতায় লিখে যাচ্ছে। এর থেকে এটা প্রমাণিত যে সে ভাল পরীক্ষা দিচ্ছে। জীবন বাবু জানান শারীরিকভাবে এতটাই অক্ষম পূর্ণিমা যে তাকে গাড়িতে করে বিদ্যালয়ের ভেতর পরীক্ষার কক্ষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে অনুমতি দিয়েছেন। যাতে পূর্ণিমার পরীক্ষা কক্ষ পর্যন্ত যেতে কষ্ট না হয়। পূর্ণিমার পরীক্ষা কক্ষে তার বসে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে পক্ষের তরফ থেকে। এখন শুধু এটাই দেখার পরীক্ষার ফলাফল যদি পূর্ণিমার ভালো হয় আগামী দিনে তাঁর পড়াশোনাটা সেই চালিয়ে যেতে পারবে কিনা? একটু সরকারি সাহায্যের আশায় তার পরিবার।