মনোজ সিংহ, সিটিসেন্টারঃ- সেক্স-র্যাকেট চালানো, চুরি এমনকি তাঁরই বাড়ি থেকে তাঁকেই উচ্ছেদের হুমকি-এমনতরো গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ সিটিসেন্টারের বিভিন্ন পাড়ায় ‘চাকরি’ করতে আসা কাজের মেয়েদের বিরুদ্ধে। গত ২০ বছরে ‘বাড়িওয়ালী-কাজের মেয়ে বিবাদ’ কেয়কবারই থানা, পার্টি অফিস পর্যন্ত গড়িয়েছে। মাঝে পরিস্থিতি খানিকটা শোধরালেও, নতুন করে কাজের মেয়েদের চোখ রাঙানীর বেশ কিছু অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে সিটিসেন্টারের ননকোম্পানী আর সেল-কোঅপারেটিভ পাড়ায়। রবিবার সকালে এখানকার আলাউদ্দিন খান বিথির ঘটনা তাই প্রমাণ করে।
২০০৬ সালে অবনীন্দ্র বিথির একটি বাড়ি কার্যতঃ ‘দখল’ করে দেহ ব্য়বসার কারবার ফেঁদেছিল সাতজন কাজের মেয়ে। তারা মূলতঃ সিটিসেন্টারে ‘ঠিকে-ঝি’র কাজে আসতো বীরভানপুর, কলাবাগান বস্তি, পলাশডিহা গ্রাম থেকে। ‘ঠিকে-ঝি’র পোষাকী ব্যবসার আড়ালে কয়েকমাস ধরে তারা ওই বাড়িটিতে দেহ ব্য়বসা চালিয়ে আসছিল। মুম্বইতে ছেলের কাছে থাকা বৃদ্ধা বাড়ি ফিরতেই বিষয়টি তিনি টের পান। পুলিশকে জানানোর পর দু’জনকে ধরে পুলিশ জেরাও করে। বাড়ি দেখভালের জন্য এক কাজের মেয়েকে ঘরের চাবি দিয়ে বৃদ্ধা চলে যান মুম্বই। সেই সুযোগেই শুরু হয় ফলাও কারবার।
রাহুল সাংকৃত্যায়ন বিথির একটি বাড়ির চুরির তদন্তে নেমে পুলিশ ওই বাড়ির পরিচারিকার জড়িত থাকার খোঁজ পায়। মৌলনা আজাদ রোডের একটি চুরির ঘটনাতেও পরিচারিকাই ছিল মধ্যমণি বলে পুলিশ জানায়। “টাকা, মোবাইল, ঘড়ি টুকটাক হাত সাফাই-এ এখানকার অধিকাংশ কাজের মেয়েই জড়িয়ে পড়ে। তবে, তারা এখন দেখছি বাড়ির মালকিনকেও মারধর শুরু করেছে”, অভিযোগ শুভ্রা মিত্র নামে স্থানীয় এক বৃদ্ধার।
রবিবার সকালে এখানকার আলাউদ্দিন খান বিথির একাকী থাকা বৃদ্ধা অপর্ণা ভট্টাচার্যকে মাথায় কাঠের ডান্ডা দিয়ে জোরালো আঘাত করে কাজের মেয়ে অপর্ণা দাস । ওই বাড়ি থেকেই অচেতন অবস্থায় দুই অপর্ণাকেই পুলিশের সাহায্য়ে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। এখানকার সিনিয়ার সিটিজেন্স ওয়েলফেয়ার ফোরামের সভাপতি পিযূষ মজুমদার বলেন, “যা পরিস্থিতি দাঁড়াচ্ছে – বয়স্ক মানুষজনের নিশ্চিন্তে বসবাস করাটাই দেখছি ভীষণ দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে পড়েছে। আমরা পাড়ায় সিসিটিভি বসানোর আবেদন জানিয়েছি।”