বিশেষ সংবাদদাতা, আসানসোল:- এবার কি মলয় ঘটকের বদলে আসানসোল থেকে মন্ত্রী হচ্ছেন বিধান উপাধ্যায়? সোমবার বিধানের নাম তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে ফেলতেই শহর জুড়ে এখন জল্পনা তুঙ্গে। তৃণমূল কংগ্রেস যদিও বিষয়টিতে এখনো অব্দি শিলমোহর দেয়নি। দলেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে-“অপেক্ষা করতে হবে বুধবার পর্যন্ত। কারণ, ওই দিনই চার-পাঁচ জন নতুন মুখ আসতে চলেছে রাজ্য মন্ত্রিসভায়। পার্টি সুপ্রিমো সোমবার নিজে নবান্নে একথা জানিয়েছেন।”
বরাবরই আসানসোলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই, সব দলাদলি ধামাচাপা দিতে গত বছরই দলের জেলা সভাপতি করা হয় বিধান উপাধ্যায়কে। তিনি বারাবনির বিধায়ক। তার বাবা মানিক উপাধ্যায়ও ছিলেন পাঁচবারের বিধায়ক। তরুণ তুর্কি বিধানকে সামনে রেখেই এগোনোর পরিকল্পনা করে তৃণমূল কংগ্রেস। তাকেই বসানো হয় আসানসোল নগর নিগমের মেয়রের পদেও। এরই মাঝে প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে রাজনীতিতে যে ঝড় বয়ে গেল, সম্ভবত তা সামাল দিতেই মন্ত্রিসভায় কিছু রদবদলকে হাতিয়ার করতে চাইছে দল। জোর দেওয়া হচ্ছে তাজা নতুন মুখের ওপর। সেই কারণেই শিকে ছিঁড়তে চলেছে বিধানের ভাগ্য।
সোমবার তৃণমূল কংগ্রেস দক্ষিণবঙ্গের চারটি সাংগঠনিক জেলার সর্বেসর্বাদের নাম নতুন করে ঘোষণা করে। তাতে দেখা যায়, বর্ধমান ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান ও সভাপতিরা অপরিবর্তিত থাকলেও, বাঁকুড়া জেলার চেয়ারম্যানের পদ থেকে প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরাকে সরিয়ে আনা হয়েছে মানিক মিত্রকে। পশ্চিম বর্ধমান জেলার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বহাল থাকলেও, জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়কে সরানো হয়েছে। দলের বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে- ‘সভাপতির নাম পরে জানানো হবে।’ আর এই ঘোষণার পর পরই জেলা জুড়ে জোর জল্পনা-তবে কি বুধবার নতুন মন্ত্রীর তালিকায় থাকছে বিধানের নামও? এদিন অবশ্য এ নিয়ে মুখ খোলেননি বিধান। এরই মধ্যে দ্বিতীয় জল্পনা-তবে কি মন্ত্রিসভা থেকে সরতে হচ্ছে মলয় ঘটককে? কারণ-মলয় আসানসোল (উত্তর) কেন্দ্রের বিধায়ক আর পাশেই বারাবনির বিধায়ক বিধান। পাশাপাশি দুটি কেন্দ্রের দুই বিধায়ককেই মন্ত্রিত্ব দিলে রাজ্যজুড়ে ছড়াতে পারে অসন্তোষও। বিশেষত: পাশেই রানিগঞ্জ বিধানসভা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন দীর্ঘদিনের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দুর্গাপুর (পূর্ব) কেন্দ্রের হেভিওয়েট বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার, যিনি আবার মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা। তাকে মন্ত্রী করবেন বলে ২০১৬ তে একবার ঘোষণাও করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও, গোষ্ঠী কোন্দল ভুলে, কোমর বেঁধে তাকে হারিয়েই সেবার হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন দুর্গাপুরের নেতারা, -বলে দলীয় সূত্রে খবর। তাই, ২০২১ এ জেতা প্রদীপকে বসিয়ে রেখে আসানসোলের পরপর দুটি কেন্দ্র থেকে দুটি মন্ত্রী কি বেমানান হবে না? সম্ভবত: তাই, বিধানকে জায়গা দিতে গেলে সরে দাঁড়াতেই হবে মলয়কে।