বিশেষ সংবাদদাতা, আসানসোলঃ- উধাও মোনালিসা আচমকাই ফিরে এলেন। মুখে মাক্স, টোটো’য় চড়ে ঢুকেও গেলেন এখানে তার ভাড়া করা বাসায়। সোমবার বিকেলে। তবে টোটো থেকে নেমে ভাড়াবাড়ির করিডোরের হাঁটাপথের দেড় মিনিটে, কয়েক দন্ড থমকে হেঁটে-হেঁটে উত্তর দিলেন সামান্যই। এদিন তিনি ছিলেন অতিরিক্ত সংযত ও সতর্ক।
- -এতদিন কোথায় ছিলেন ?
- -‘আমি অসুস্থ ছিলাম। তাই আসিনি।’
-টেট কেলেঙ্কারিতে আপনার নাম জড়িয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বারে বারে বলছে, আপনি নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত। - -‘বাজে কথা। ভিত্তিহীন। আমি শিক্ষক পরিবারের সন্তান। ব্যক্তিগতভাবে নিজের কাছেও একজন অত্যন্ত সৎ মানুষ।’
- -অর্পিতা মুখার্জি বলছেন আপনি প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং টেট কেলেঙ্কারিতে জড়িত।
- -‘আমি অর্পিতাকে চিনি না। কে কি বলছেন সেটা তাদের ব্যাপার’।
রাজ্যে টেট কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর সি.বি.আই এবং ই.ডি.র তদন্তে শেষ পর্যন্ত পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার এবং পার্থ-অর্পিতার গ্রেপ্তারের পর রাজ্য জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। তখনই উঠে আসে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপিকা মোনালিসা দাস এর নাম। বিজেপি এবং সিপিএম এরপর আলাদা আলাদা করে আসানসোলের বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোনালিসার নিয়োগ অবৈধ দাবি করে বিক্ষোভ দেখায়। তারা দাবি করে মোনালিসাকে বরখাস্ত করার। এরপর বিজেপির পক্ষে দাবি করা হয়- কুড়ি কোটি টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশে ডিগ্রি বিক্রি করেছেন মোনালিসা । এমনকি তিনি টেট কাণ্ডের জেরে গোপনে বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছেন বলে দাবি করে রাজনৈতিক দলগুলি। তার দীর্ঘ আড়াই মাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গায়েব হয়ে যাওয়ার দরুনই নিত্যদিনই তার বহু ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়েও আসানসোল-দুর্গাপুরের বাজার মশগুল হয়ে পড়ে। সেই মোনালিসাই সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজে যোগ দিলেন। অথচ, গত মাসে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে গুরুত্বপূর্ণ, দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও সম্ভবতঃ নিজেকে লুকোতেই বিশ্ববিদ্যালয় মুখো হননি মোনালিসা।
আসানসোলের গড়াই রোডে মোনালিসার ভাড়াবাড়ি। টেট কাণ্ডের জেরে বারে বারে চর্চিত হয়েছে সেই ভাড়া বাড়িটিও। এদিন ভাড়া বাড়িতে ঢোকার মুখে মোনালিসা দাস অবশ্য বিশেষ বাধা পাননি। যে বাড়ির মালিক দু’মাস আগেও মোনালিসা আতঙ্কে কাঁটা হয়ে গিয়েছিলেন, তিনিও সোমবার ছিলেন বিস্ময়কর ভাবে অদৃশ্য! এদিন, বিশ্ববিদ্যালয়ও অবশ্য কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।