এই বাংলায় ওয়েব ডেস্কঃ– রক্তের আকাল মেটাতে এবার নকল রক্ত তৈরি নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। এই গবেষণা প্রকল্পে যোগ দিয়েছে ব্রিস্টল, কেমব্রিজ, লন্ডন এবং এনএইচএস ব্লাড অ্যান্ড ট্রান্সপ্ল্যান্টের বিভিন্ন গবেষক দল। ইতিমধ্যে ল্যাবে রক্ত তৈরি করে মানব দেহে তা প্রবেশও করানো হয়েছে। আপাতত দুজন ইচ্ছুক ব্যক্তি এই ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করেছেন। অবশ্য ১০ জন সুস্থ ভলান্টিয়ারের উপরে এই ল্যাবে উৎপন্ন রক্ত পরীক্ষা করার কথা ভাবছে গবেষক দলটি। এ-ক্ষেত্রে চার মাস অন্তর দু বার ৫-১০ মিলিলিটার রক্ত দেওয়া হবে ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের। এক বার দেওয়া হবে সাধারণ রক্ত, আর দ্বিতীয় বার দেওয়া হবে ল্যাবে তৈরি রক্ত। এটাই বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম রক্তদানের ক্লিনিকাল ট্রায়াল বলে দাবি করেছেন ব্রিটেনের গবেষকরা।
কীভাবে তৈরি হয় এই নকল রক্ত!জানা গেছে সাধারণ রক্তদানের মাধ্যমেই বিষয়টা শুরু হয়। ৪৭০ মিলিলিটার রক্ত নিয়ে শুরু হয় কাজ। এই রক্ত থেকে নকল রক্ত তৈরি করতে সময় লাগে প্রায় তিন সপ্তাহ। প্রাথমিক ভাবে আধ মিলিয়ন স্টেম সেল থেকে তৈরি করা হয় প্রায় ৫০ বিলিয়ন লোহিত রক্ত কণিকা। তা ফিল্টার করে প্রায় ১৫ বিলিয়ন লোহিত রক্তকণিকা বার করা হয়। যা ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য প্রস্তুত হয়। তবে এই রক্তের সঙ্গে একটি রেডিওঅ্যাকটিভ বা তেজস্ক্রিয় উপাদান মেশানো হয়। যা সাধারণত কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই রক্ত শরীরে কতক্ষণ থাকছে, তা এই উপাদানের মাধ্যমে দেখতে পাবেন বিজ্ঞানীরা। গবেষকদের দাবি যে, সাধারণ রক্তের তুলনায় ল্যাবে তৈরি রক্ত আরও বেশি শক্তিশালী হবে।
প্রসঙ্গত এমন অনেক রোগী রয়েছেন যাদের নিয়মিত রক্ত দিতে হয়। এছাড়া কিছু বিরল ব্লাড গ্রুপের ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়। কয়েকটি রক্তের গ্রুপ ভীষণই বিরল। বিরলতম ব্লাড গ্রুপের মধ্যে অন্যতম বম্বে ব্লাড গ্রুপ। যা সর্বপ্রথম আমাদের দেশেই চিহ্নিত করা হয়েছিল। এইসব গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন হলেও সমস্যা দেখা যায়। তাই ল্যাবে তৈরি নকল রক্ত মানব দেহে সঠিকভাবে কাজ করলে তা এক যুগান্তকারী আবিষ্কার হবে। তবে এই গবেষণায় এখনও অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ বাকি রয়েছে বলে জানিয়েছন গবেষকরা।