সঙ্গীতা চ্যাটার্জী(চৌধুরী)ঃ- কেমন ভাবে প্রার্থনা করলে শ্রীশ্রী মায়ের আদেশ পাওয়া যায় তা শান্তানন্দজী বলেছিলেন। তিনি একবার টিবিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য বাইরে যাচ্ছিলেন, অথচ তিনি নিজের রোগ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না, সেই সময় তার এক সেবক তার জন্য প্রচুর সেবা করেছিলেন এমনকি সেই সেবক তার সাথে খাওয়া-দাওয়া পর্যন্ত করেছিলেন, এরপর তিনি যখন জানতে পারেন যে তার টিবি হয়েছে তখন সেই সেবকটির জন্য তিনি চিন্তায় পড়ে যান। মায়ের কাছে তিনি প্রার্থনা করেন আর সেই প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন স্বয়ং মা।
শান্তানন্দজি বলেছিলেন, ‘শ্রীশ্রীমায়ের আদেশ পাওয়ার প্রক্রিয়া’। শ্রীশ্রীমা শান্তানন্দজীকে বলেছিলেন, ‘জীবনে যদি কোনো সঙ্কট আসে আমাকে স্মরণ কোরো। নিজেকে কয়েক দিনের জন্য অপর লোকদের থেকে আলাদা রেখে খুব করে জপধ্যান ও প্রার্থনা কোরো এবং আমার কাছে জিজ্ঞাসা করবে, ‘মা, কী করব?’ “ঐ সময় অল্প খাবে; নিজের দেহ-মন পবিত্র রাখবে; যতটুকু না হলে নয়, ততটুকুই অপরের সঙ্গে কথা বলবে। অপরকে জানতে দেবে না তুমি কী করছ। একমনে এভাবে প্রার্থনা ও সাধনা করে যাবে। কখনো ধৈর্য হারাবে না। যদি দেখ আমার আদেশ পেতে বা আমার উত্তর পেতে দেরি হচ্ছে তাতেও ধৈর্য হারাবে না। যদি দেখ কোনো উত্তর আসছে না, তবে জানবে তোমার মন এখনো সেই স্তরে আসেনি যাতে তুমি আমার আদেশ পাও। ভক্তি ও বিশ্বাসের সঙ্গে ব্যাকুল হয়ে ডেকে গেলে আমার কাছ থেকে উত্তর পাবে।”
দিন তিনেক পরে শান্তানন্দজী মায়ের দর্শন ও আদেশ পেয়েছিলেন। তিনি মাকে বলেছিলেন, “মা, আমার টিবি-তে মৃত্যু হয় তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই। কিন্তু এই ছেলেটি (সলিল, পরে স্বামী শ্রীধরানন্দ) আমার সেবা করছে, এর যেন টিবি না হয়-এই আমার প্রার্থনা।” মা সম্মতি জানিয়েছিলেন। বহু স্থানে ঘুরলেও শ্রীধরানন্দজীর সারা জীবনকালে কখনো টিবি হয়নি। শান্তানন্দজী মায়ের আদেশ পাওয়ার পর এই কথা স্বয়ং শ্রীধরানন্দজীকে বলে ছিলেন।