নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– সকলেই অবসরপ্রাপ্ত ইস্পাত কর্মী। সকলেরই বয়স ৭০ বা ৭০ এর বেশী। এই বয়সেই লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন ওঁরা। স্টীল এমপ্লইজ ফোরাম অ্যান্ড ওয়েলফেরার সোসাইটির ডাকে গত ২৮শে নভেম্বর থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দুর্গাপুর টি.এ বিল্ডিংয়ের সামনে চলছে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি।
প্রসঙ্গত অবসর গ্রহণের পর দীর্ঘ বছর কেটে গেলও দুর্গাপুর স্টীল প্ল্যান্ট ও অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্টের প্রাক্তন কর্মচারীরা তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। কোয়ার্টারের লিজ ও সুদ সহ গ্রাচুইটির দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন স্টীলের এই সমস্ত প্রাক্তন কর্মচারীরা। অভিযোগ সেইল কর্পোরেট, লেবার মিনিস্ট্রি, গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া এবং সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার থাকা সত্ত্বেও দুর্গাপুর স্টীল প্ল্যান্ট ও অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্টের প্রাক্তন কর্মীদের কোয়ার্টারের লিজ ও গ্রাচুইটি সুদ সহ ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। জীবনের শেষ বয়সে পৌঁছে কারখানার দেওয়া কোয়ার্টারেই থেকে গেছেন এই সব প্রাক্তন কর্মীরা। ফলে অবসরের সময় তাঁদের গ্রাচুইটির টাকা আটকে রাখা হয়। অথচ স্টীল অথোরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের বিভিন্ন ইউনিটে কোয়ার্টার এবং গ্রাচুইটি সুদ সহ ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন আন্দোলনরত ডিএসপি ও এএসপির প্রাক্তন কর্মীরা।
এর আগে ২০২০ সালের ৫ফেব্রুয়ারী থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত টানা ৪৫ দিন আন্দোলন চালিয়েছিলেন অসরপ্রাপ্ত এই বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। আন্দোলন আরো দীর্ঘতর করার পরিকল্পনা থাকলেও কোভিড ১৯ মহামারীর জন্য ডেপুটি মেজিস্ট্রেট ও কর্তৃপক্ষের আবেদনে ও আশ্বাসে সেই সময় গণ অবস্থান বিক্ষোভ স্থগিত করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু তার পর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও কোনও সুরাহা হয়নি। তাই বৃদ্ধকালীন নানান শারীরিক অসুস্থতাকে সঙ্গে নিয়ে চলতি বছরে ফের পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেছেন স্টীল প্ল্যান্টের প্রাক্তন কর্মীরা। ইতিমধ্যে অন্দোলনের ৮০ জন সহযোদ্ধা মারাও গেছেন।
এই অবস্থায় স্টীল অথোরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যানের কাছে কোয়ার্টার ও গ্রাচুইটি সুদ সহ ফেরত দেওয়ার মানবিক আবেদন রেখেছেন ডিএসপি ও এএসপির অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। এখন এই মানবিক আবেদনে সেইল কর্তৃপক্ষ কি পদক্ষেপ নেয় সেদিকেই তাকিয়ে ইস্পাত নগরীর বাসিন্দারা।