জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,বর্ধমানঃ- দেখতে দেখতে দশটা বছর অতিক্রম করে এগারোতম বছরে পদার্পণ করল বিশিষ্ট সাংবাদিক সোমনাথ ভট্টাচার্যের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বর্ধমানের স্বেচ্ছাসেবী সংস্হা ‘সহযোদ্ধা’। সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষের পাশে থাকার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় এই সংস্হা। কিন্তু লক্ষ্য যাদের আকাশ ছোঁয়া স্বাভাবিক ভাবেই তাদের কাজের পরিসর অনেক বেড়ে যায়। দুস্থদের সাহায্য করা, ক্ষুদেদের জন্য অঙ্কন, আবৃত্তির মত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করার সঙ্গে সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন স্তরের গুণীজন ও কৃতি মানুষদেরও তারা সম্বর্ধনা দিয়ে যাচ্ছে। এরসাথে অসহায় মানুষদের জন্য আইনি পরিষেবা তো আছেই।
১০ ই ডিসেম্বর বর্ধমান শহরের সুপরিচিত উদয়চাঁদ জেলা গ্রন্থাগারে মহাসমারোহে ‘সহযোদ্ধা’-র দশম বর্ষপূর্তি উদযাপিত হয়। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জেলার তিন বিশিষ্ট সাংবাদিক মোহাম্মদ আসিফ, সুপ্রকাশ চৌধুরী ও কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দীন এবং বিশিষ্ট সমাজকর্মী তথা শিক্ষিকা সুতপা দাস, বর্ধমান মহিলা থানার পুলিশ অফিসার ও বিশিষ্ট নৃত্য শিল্পী কৃষ্ণ সাহাকে ‘বর্ধমান রত্ন’ সম্মাননা দেওয়া হয়। এছাড়া অঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ক্ষুদেদের হাতেও পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক খোকন দাস, কলকাতা হাইকোর্টের এজিপি আনসার মন্ডল, বর্ধমান মহিলা থানার ওসি বনানী রায় সহ আইজেএর পূর্ব বর্ধমান জেলার সম্পাদক অরূপ লাহা ও সংশ্লিষ্ট সংস্হার সাংবাদিক সংগঠনের পূর্ব বর্ধমান জেলার সভাপতি স্বপন মুখার্জ্জী, বিশিষ্ট সাংবাদিক তারকনাথ রায়, বৈদ্যনাথ কোনার, সৌরিশ দে, বিশিষ্ট আইনজীবী কমল চন্দ্র দত্ত, অরূপ রতন সরকার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ধান্য ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে বিশ্বজিৎ মল্লিক, ‘মানুষ মানুষের জন্য’ সংস্থার সভাপতি শেখ পিন্টু প্রমুখ। এছাড়াও ‘সহযোদ্ধা’- পক্ষ থেকে ছিলেন সম্পাদক প্রীতিলতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সভাপতি ঋষিগোপাল মণ্ডল, সোমনাথ ভট্টাচার্য্য সহ কার্যকরী সমিতির প্রত্যেক সদস্য।
এদিন স্থানীয় বিধায়ক খোকন দাস বলেন – যে যে দলই করুক না কেন, ভালো কাজ করলে তার পাশে থাকব’। অন্যদিকে কলকাতা হাইকোর্টের এজিপি আনসার মন্ডল বলেন -“আইনী সচেতনতা শিবির আয়োজনে ভালো কাজ করছে এই সংগঠনটি”।
সম্মাননা পেয়ে কার্যত আপ্লুত হয়ে পড়েন কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দীন। তিনি বলেন – গত কয়েকদিন ধরে কলকাতার কয়েকটি সুপরিচিত সংস্হা আমাকে সম্বর্ধনা দিয়েছে ঠিকই কিন্তু নিজের ঘরে পাওয়া সম্বর্ধনার স্বাদ ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। আমাকে যোগ্য হিসাবে গণ্য করায় আমি ‘সহযোদ্ধা’-র কাছে কৃতজ্ঞ।
সহযোদ্ধার সভাপতি ঋষিগোপাল মণ্ডল জানান- প্রায় দশ বছরের বেশি সময় ধরে বর্ধমান ‘সহযোদ্ধা’ সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের স্বার্থে কাজ করে আসছে। আমরা ধারাবাহিক ভাবে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ নামক সচেতনামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়িত করে আসছি এবং সেই সঙ্গে জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় সমাজের দুর্বল অংশের মানুষকে আইনি পরিষেবা দিয়ে আসছি। এছাড়া নানান সামাজিক কর্মকাণ্ডে সারা বছরই ‘সহযোদ্ধা’ ব্যস্ত থাকে। আগামী দিনে সকলের সহযোগিতা পেলে আমরা আরও বেশি সংখ্যক মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারব।