সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ- প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সার্ভে নিয়ে রাজ্য় জুড়ে প্রতিদিনই নানান অভিযোগ উঠছে। এরই মধ্যে বাঁকুড়া পৌরসভায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাওয়া বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক উপভোক্তার বিরুদ্ধে। ঘটনাটিকে নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তাঁদের দাবি শাসক দলের নেতার নেত্রীরা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। অন্যদিকে পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে উপযুক্ত নথি সহ পুরভার নজরে এনেছেন বলে দাবি করেছেন।
জানা গেছে ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে বাঁকুড়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের গোপীনাথপুর, উপর পাড়ার বাসিন্দা বীরেন লোহ সরকারী অর্থানুকূল্যে ‘বাংলার বাড়ি’ অর্থাৎ এইচ.এফ.এ প্রকল্পে বাড়ি পেয়েছিলেন। পরে সেই বাড়ি তিনি বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ। সরকারি প্রকল্পে পাওয়া বাড়ি বিক্রি করা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। তা সত্ত্বেও কিভাবে ওই উপভোক্তা বাড়ি বিক্রি করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অন্যদিকে বাড়ি বিক্রির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন উপভোক্তা বীরেন লোহ ও ক্রেতা সন্দীপ দাস দুজনেই। বীরেন লোহ জানান, তিনি লটারির টিকিট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বেশকিছুদিন ধরে সেই ব্যবসায় লোকসান চলছিল। তাছাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত ঝামেলাতেও জড়িয়েছিলেন। যার জেরে তাঁর প্রাণ সংশয় হয়। তাই তিনি নিজের প্রাণ বাঁচাতে সরকারি প্রকল্পের বাড়িটি বিক্রি করে সেই টাকায় অন্যত্র বাড়ি কিনে বসবাস করছেন। তবে সরকারি প্রকল্পের বাড়ি যে বিক্রি করা যায় না, তা তিনি জানতেন না। অন্যদিকে ক্রেতা সন্দীপ দাসের বক্তব্য, সমস্ত নিয়ম কানুন মেনে আট লক্ষ টাকাতে ওই বাড়ি কিনেছেন। রেজিস্ট্রি হয়েছে, পর্চাও রয়েছে। কেউ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে নিজের বাড়ি বিক্রি করতেই পারে। যদি আপত্তি থাকে তাহলে সরকারিভাবে কেন আগে বাধা দেওয়া হয়নি ? পাল্টা প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এদিকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড অর্থাৎ ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশীষ লাহার দাবি, ওই উপভোক্তা ১৭ লক্ষ টাকায় সরকারি প্রকল্পে পাওয়া বাড়ি এক ব্যবসায়ীকে বিক্রি করেছেন। তবে রেজিস্ট্রির সময় তার চেয়ে অনেক কম মূল্য দেখিয়েছেন। বিষয়টি তিনি প্রশাসনিক স্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন।
যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের মদতেই সরকারি বাড়ি বিক্রির মতো দুর্নীতির চলছে। অবিলম্বে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতা দেবাশীষ দত্ত।