জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,ভাতারঃ- শেষ পর্যন্ত কি আবাস যোজনা সংক্রান্ত দুর্নীতি গলার কাঁটা হয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের দুয়ারে কোনো আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চলেছে? আবাস যোজনাকে কেন্দ্র করে যেভাবে চারদিকে ক্ষোভ দ্যাখা যাচ্ছে তাতে এই আশঙ্কাটাই বড় হয়ে উঠেছে।
গ্রামীণ রাজনীতিতে আবাস যোজনার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে সেটা ভোটের ফলের ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে। বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য সরকার এই প্রকল্প বাবদ কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে কোনো আর্থিক অনুদান পাচ্ছিল না। অবশেষে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জীর প্রচেষ্টার ফলে কেন্দ্র সরকার আর্থিক অনুদান দিতে সম্মত হয়। শর্ত ছিল নিখুঁত তালিকা তৈরি করতে হবে। কোনো যোগ্য উপভোক্তা যেন বাদ না যায় এবং অযোগ্যরা বাদ যায়। একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত রাজ্য সরকার নিখুঁত তালিকা তৈরির লক্ষ্যে ত্রিস্তরীয় নজরদারির ব্যবস্হা করে এবং তাতেই সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
দ্যাখা যাচ্ছে কোথাও দালান বাড়ির মালিকের নাম ছিল আবাস যোজনার উপভোক্তার তালিকায় এবং স্ক্রুটিনির সময় তাদের নাম বাদ দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আশাকর্মীদের হেনস্থা করার অভিযোগও আসছিল। যারা হেনস্থা করছিল মূলত তারা নাকি তৃণমূলের স্হানীয় নেতৃত্ব।
এবার সম্পূর্ণ উল্টো ঘটনার সাক্ষী থাকল পূর্ব বর্ধমানের ভাতার ব্লকের সাহেবগঞ্জ ১ ও ২ নং পঞ্চায়েতের ওরগ্রাম, গ্রামডিহি সহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ তারা বসবাসের অযোগ্য মাটির বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে খুব কষ্ট করে বাস করে আসছে। যেহেতু প্রথম তালিকায় নাম ছিল এবং সরকারের দেওয়া কোনো শর্তই তাদের জন্য প্রযোজ্য নয় তাই তাদের আশা ছিল এবার হয়তো আবাস যোজনায় তারা বাড়ি পাবে। কিন্তু স্ক্রুটিনির পর দ্যাখা গ্যালো কোনো এক অজানা কারণে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হতেই তারা সংবাদ মাধ্যমের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়ে। এই অভিযোগে কেউ কেউ প্রধান ও আশাকর্মীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে ওরগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার সেঁটে দেয়। এই পোস্টার পড়াকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য দ্যাখা যায় এবং পোস্টার দ্যাখার জন্য ভিড়ও হয়।
তৃণমূল বিরোধীদের বক্তব্য – যেভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের নাম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে তাতে এটা কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। তবে আর যাইহোক গরীব মানুষের বাড়ি নিয়ে দুর্নীতি করা ঠিক নয়। সরকারের উচিত কঠোর হাতে এই দুর্নীতি দমন করা এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্হা নেওয়া।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই প্রধান বিনয়কৃষ্ণ ঘোষ বললেন – এই ব্যাপারে তার কিছু করার নাই। সমস্তটাই জেলা প্রাসনের হাতে। পোস্টার পড়া সম্পর্কে তার বক্তব্য – তার দুর্নাম করার জন্য দলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী হয়তো রাতের অন্ধকারে এই কাজ করেছে।