সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ– বড় দিনের বীরের সম্মান জানিয়ে গান স্যালুট দিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন হল সিকিমে দুর্ঘনায় মৃত বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহের ভালুকা গ্রামের বাসিন্দা সেনা জওয়ান পোপীনাথ মাকুড়ের।
শুক্রবার সকালে উত্তর সিকিমে খাদে বাস পড়ে মৃত্যু হয় ১৬ জন সেনা জওয়ানের। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ৩৯ বছরের পোপীনাথ। শুক্রবার বিকেলে সে খবর পাওয়ার পরেই গ্রামে শোকের ছায়া নেমেছিল। তারপর থেকেই শোকসন্তপ্ত পরিবার ও গ্রামের মানুষ অপেক্ষা করেছিল গ্রামের ছলের গ্রামে ফেরার। শনিবার বিকেলে বিশেষ হেলিকপ্টারে তাঁর দেহ পৌঁছয় পানাগড় সেনাছাউনিতে। সেখান থেকে রবিবার বেলা ১১ টা নাগাদ সেনা জওয়ানের কফিনবন্দি দেহ পৌঁছয় বাঁকুড়ার ভালুকা গ্রামে। মরদেহ গ্রামে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে মৃত সেনা জওয়ানের পরিবার সহ গোটা গ্রাম। অগনিত মানুষ সেনা জওয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজি হয়েছিল। উপস্থিত হয়েছিলেন বাঁকুড়ার জেলা শাসক কে রাধিকা আইয়ার সহ জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। বীরের সম্মান জানাতে ভালুকার খেলার মাঠে একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। সেখানেই নামানো হয় গোপীনাথের কফিনবন্দি দেহ। তারপর তাঁর দেহে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি, বাঁকুড়ার জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার, এসডিও (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) গণেশ বিশ্বাস, বিডিও (বিষ্ণুপুর) শতদল দত্ত প্রমুখ।
জানা গেছে ২০০১ সালে সেনা বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত ভালুকা গ্রামের ছেলে গোপীনাথ মাকুড়। গত আগস্ট মাসে শেষবার দুমাসের ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। কথা ছিল আগামী বছরই চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নেবেন। তার জন্য বাঁকুড়ায় বাড়িও তৈরি করছিলেন। সেই বাড়ি তৈরিও শেষের পথে। আগামী মার্চ মাসে গৃহপ্রবেশে আসারও কথা ছিল গোপীনাথের। কিন্তু আসা আর হল না। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে গত বৃহঃস্পতিবার রাতে শেষবারের মতো স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন গোপীনাথ। তারপর শুক্রবার সকালেই ঘটে যায় ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।