সংবাদদাতা, বাঁকুড়া:- আবাস যোজনা নিয়ে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে রাজ্যে শাসক দলের বিরুদ্ধে। এরই প্রেক্ষিতে কয়েক দিন আগে বিডিওকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বাঁকুড়ার তালড্যাংরার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী। এবার বিডিও ও থানার আইসিকে হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন বাঁকুড়ার এক কৃণমূল নেতা। তৃণমূলের গঙ্গাজলঘাটি ১ নম্বর সাংগঠনিক ব্লক সভাপতি হৃদয় মাধব দুবের মুখে শোনা গিয়েছে ওই হুমকি। সভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় তাঁকে বলতে শোনা যায় “বিডিও অফিসে ডেপুটেশন দিতে গেলে ডেপুটেশনকারীরা বিডিও অফিসের বাইরে থাকেন। আর একটি প্রতিনিধি দল দফতরে ঢুকে ডেপুটেশন দেয়। কিন্তু বিজেপি ডেপুটেশনের সময় গেট খুলে সকলে কিভাবে বিডিও অফিসে ঢুকল তার কৈফিয়ৎ আমাদের সামনে বিডিও ও আইসি কে দিতে হবে। বিডিও ও আইসি শুনে রাখুন বিজেপির দালালি করা চলবে না”। এরপরই তৃণমূলের ওই ব্লক সভাপতিকে রীতিমত হুমকির সুরে বলতে শোনা যায়, “আমরা রামকৃষ্ণ মিশন থেকে সমাজসেবা করতে এখানে আসিনি। আমরা রাজনৈতিক দল। রাজনীতির মাধ্যমে সমাজসেবা করি। এইভাবে বিজেপিকে সমর্থন করলে আমরা কিন্তু আপনাদের ছাড়ব না। আমরা বিডিও অফিস ও থানা ঘেরাও করব।”
প্রসঙ্গত, আবাস যোজনায় শাসকদলের দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ-এর অভিযোগ তুলে বুধবার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের বিডিও অফিসে ডেপুটেশন দেয় বিজেপি। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহ ও শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনা বাউরির নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরা ওই দিন অমরকানন কলেজ মোড় থেকে মিছিল করে গঙ্গাজলঘাটি বিডিও অফিসে যান। সেখানে পুলিশের বাধা অগ্রাহ্য করে, মূল ফটক জোর করে খুলে বিডিও অফিসের ভিতর ঢুকে পড়ার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। বিজেপির ওই কর্মসূচির পাল্টা বৃহস্পতিবার অমরকাননে সভা করে তৃণমূলও। আর সেই সভাতেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল ব্লক সভাপতি বিতর্কিত মন্তব্য করেন।
এদিকে তৃণমূল নেতার ওই মন্তব্য ঘিরে বাঁকুড়ার রাজনীতিতে শুরু হয়ে গিয়েছে তরজা। তৃণমূল নেতার সমালোচনায় সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতৃত্বের দাবী শান্তিপূর্ণ মিছিল করে বিডিও অফিসে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছিল। সেই মিছিল দেখে ভয় পেয়ে গিয়ে তৃণমূল নেতারা প্রলাপ বকছেন। অন্যদিকে তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের দাবি গণতান্ত্রিক প্রথা মেনে সব রাজনৈতিক দলই ডেপুটেশন দিতে পারে। কিন্তু সরকারী আধিকারিক ও মানুষকে সম্মান দিয়ে মন্তব্য করা উচিৎ। আমাদের দলের কেউ এমন মন্তব্য করে থাকলে সেটাও উচিৎ নয়।