সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী)ঃ– বাংলার প্রধান শৈব তীর্থ হিসেবে বিবেচিত হয় ‘তারকেশ্বর’। এই তারকেশ্বরে বাবা তারকনাথের লীলা বহু যুগ ধরে, বহু সময় ধরে লোকমুখে প্রচলিত হয়ে আছে। অনেকেই বাবা তারকনাথের মন্দিরে নিজের মনোবাঞ্ছা নিয়ে ধর্না দিয়েছেন আর লীলাময় তারক নাথ তাঁদের প্রতি কৃপাবর্ষণ করে তাঁদের মনের অসম্ভব চাওয়া গুলিকেও পূরণ করেছেন। সেই রকমই একটি লীলা কাহিনী আজকে বলবো।
অনেক কাল আগে একজন স্ত্রী তাঁর রোগগ্রস্ত স্বামীর রোগ মুক্তির কামনায় তারকেশ্বরে বাবার মন্দিরে এসে ধর্না দিয়েছিলেন। তাঁর স্বামী অম্লশূল রোগগ্রস্ত হওয়ায় প্রচুর ডাক্তার বৈদ্য তাকে দেখানো হয়, কিন্তু শেষমেষ তাতে কোনও ফল বা আশার আলো না দেখতে পেয়ে তিনি বাবার মন্দিরে ধর্না দেন। ধর্না দেওয়ার সময় তিনি বাবা তারকনাথের কাছে মানত করেন যে তাঁর স্বামী রোগ মুক্ত হলে তিনি তাঁর স্বামী সহ শেওড়াফুলি থেকে পদব্রজে গঙ্গাজল নিয়ে এসে শিব পুজো করবেন।
সতী স্ত্রীর একাগ্রতায় বাবার মনে দয়া হয় এবং তাঁর স্বামী রোগ মুক্ত হয়। কিন্তু তাঁর স্বামী এতটাই দাম্ভিক এবং নাস্তিক প্রকৃতির ছিলেন যে তিনি বিশ্বাসী করেন না যে বাবা তারকনাথের দয়ায় তিনি রোগমুক্ত হয়েছেন। তিনি বলতে থাকেন যে , ডাক্তারই তাকে ওষুধ দিয়ে ভালো করেছে। এরপর সতী স্ত্রী বারংবার তাঁর স্বামীকে জল নিয়ে পূজা করতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে থাকলে সেই ভদ্রলোক বলেন “আমি পাটকাঠির বাঁকে সুতো দিয়ে বাঁধিয়া যদি ২ কলসি গঙ্গাজল নির্বিঘ্নে তারকেশ্বর লইয়া যাইতে পারি, তবে বাবার মহিমা স্বীকার করিব নতুবা নহে।”
সতী স্ত্রীর মান রক্ষা করবার জন্য বাবা তারকনাথ স্বয়ং সেই কলসী হাতে ধরে তাঁর পিছন পিছন আসেন কিন্তু নাস্তিকের হাতে আনা জল বাবা তারকনাথ গ্রহণ করেন না, বাবার আদেশে সেই জল শিবগঙ্গা অর্থাৎ দুধ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।