নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– ওরাও বাঁচুক,আমরাও বাঁচি। বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে মানুষের নিজেদের স্বার্থেই ওদের বাঁচানো উচিৎ। আর ওদের বাঁচাতে গেলে পরিবেশন দূষনও রুখতে হবে। বন সংরক্ষণ করতে হবে। গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। ওরা মানে বন্যপ্রাণী ও পথ সারমেও -বিড়াল সহ সমস্ত প্রাণীকুল। আর পশু প্রাণীর নিধন রুখতে তাঁদের রক্ষা করার প্রয়োজনীয়তার বার্তা নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে সাইকলে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন দুর্গাপুরের দুই ভাইবোন। দাদা দীপ্ত রায় দুর্গাপুর ইস্পাতের কর্মী আর বোন ছন্দা পাঁজা আকে পল্লী বিবেকানন্দ স্কুলের শিক্ষিকা। মঙ্গলবার শহরের প্রাণকেন্দ্র দুর্গাপুরের সিটিসেন্টার থেকে ওড়িশার উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন দুজন।
পথসারমেয় এবং বন্যপ্রাণী নিধন, পরিবেশ দূষন রোখার বার্তা দিতে সাইকেল নিয়ে ৫২৭কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবেন এই ভাই-বোন। গন্তব্য ওড়িশার ভূবনেশ্বর। বাঁকুড়া, মেদিনীপুর হয়ে যাওয়ার পথে একদিকে যেমন সচেতনার বার্তা দেবেন, তেমনই এই যাত্রা পথে অসুস্থ সারমেও ও পশুপ্রাণীদের ওষুধ দিয়ে শুশ্রূষাও করবেন। তাই সঙ্গে নিয়েছেন প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রও।
দীপ্ত ও ছন্দা জানালেন তাঁরা ছোটথেকেই পশুপ্রেমী। বিভিন্ন সময় পশু হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছেন। এবার মানুষকে সচেতন করতে রাস্তার নামলেন। ছন্দা জানালেন, পশু প্রাণীকে ভালোবাসতে না পারলেও তাদের অন্তত কোনও ক্ষতি বা তাদের হত্যা করে কোনও লাভ নেই। তাতে আখেরে ক্ষতি আমাদেরই।
ভারতীয় সংস্কৃতি প্রাচীন কাল থেকেই পশু-প্রাণী প্রকৃতির সুরক্ষা তথা যথাযথ সম্মান দেওয়াতে বিশ্বাসী। তাই এই সংস্কৃতিতে গাছ-গাছালি, নদী, প্রকৃতি, পশু পাখিকে পুজোর প্রচলন। আর পুজোর মাধ্যমেই প্রকৃতি ও প্রাণীকুলকে সম্মান জানানো হয়। কিন্তু বর্তমানে স্বার্থপরতার যুগে দিকে দিকে বেড়ে চলেছে বন্য জীবজন্তু এবং পথ সারমেও হত্যার সংখ্যা। বর্তমান সময়ে মানুষ ভুলে গেছে, মানুষের পাশাপাশি সমস্ত প্রাণীকুলও প্রকৃতির অঙ্গ। এই পৃথিবী যেমন মানুষের বসবাসের জন্য তেমনই জীবকুলের জন্যও। এখানে সবার সমানভাবে বাঁচার অধিকার রয়েছে। আর এই বার্তা মানুষের কাছে পোঁছে দেওয়ার মতো মহৎ উদ্যোগ নেওয়ায় দুর্গাপুরের দুই ভাইবোনকে কুর্নিশ জানাচ্ছে শিল্পাঞ্চলবাসী।