eaibanglai
Homeএই বাংলায়অটিস্টিক আক্রান্তদের জন্য সচেতনতা যাত্রার আয়োজন করল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা

অটিস্টিক আক্রান্তদের জন্য সচেতনতা যাত্রার আয়োজন করল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,কলকাতাঃ- অটিজম হল শিশুদের এক ধরনের জটিল স্নায়বিক বিকাশ জনিত সমস্যা। এই রোগ শিশুদের কথাবার্তা ও সামাজিক যোগাযোগ করার ক্ষমতাকে নষ্ট করে এবং মানসিক, শারীরিক ও সামাজিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তিন বছর হওয়ার পর থেকে একটি শিশুর মধ্যে অটিজমের লক্ষনগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে শুরু করে। যদিও এর লক্ষণ বাচ্চা ভেদে ভিন্ন রকম হতে পারে।

অটিজম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকার জন্য অটিস্টিক আক্রান্ত শিশুর বাবা-মা মনের দুঃখে ভেঙ্গে পড়েন। কিন্তু শুরুতে ধরা পড়লে এবং বাচ্চাটির সঠিক চিকিৎসা হলে সেও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। এদের বুদ্ধি অনেকের থেকে বেশি হয় এবং কিছু বিশেষ দক্ষতাও থাকে।

সচেতনতার অভাবের জন্য রোগটিকে চিনতেই পারেন না অভিভাবকরা। ফলে এগিয়ে আসতে হয় জাতিসংঘকে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০৭ সালে ২ এপ্রিল দিনটিকে ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত জাতিসংঘের সাতটি দিবসের মধ্যে এটি হলো অন্যতম। দিনটি পালনের মূল লক্ষ্য হলো অটিজম সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করা, আক্রান্তদের সম্পর্কে গবেষণা, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং তাদের সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করা।

এলাকার মানুষকে সচেতন করার জন্য ২ রা এপ্রিল ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ দিনটি বেছে নেয় কলকাতা লেকটাউনের ডিউইশ মাল্টি ডিসিপ্লিনারি থেরাপি সেন্টার নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের পক্ষ থেকে একটি পদযাত্রার আয়োজন করা হয় । লেকটাউনের জয়া সিনেমা হলের সামনে একটি সমাবেশ থেকে পদযাত্রাটি শুরু হয়ে লেকটাউন ভিআইপি রোড সংলগ্ন বড় ঘড়ির সামনে শেষ হয়। এই পদযাত্রায় অটিস্টিক আক্রান্ত মানুষ ও তাদের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। প্রসঙ্গত মানুষের মধ্যে অটিজম সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য দীর্ঘদিন ধরেই এই সংস্থাটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে চলেছে।

সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর অরূপ হাজরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নেহেরু চিল্ড্রেনস মিউজিয়ামের সুদীপ সিমল, ‘অন্বেষা’র অর্ণব ভট্টাচার্য, অভিনেত্রী এ্যনমেরী টম, ফিল্ম ডিরেক্টর সৌভিক কুন্ডু, ডিস্যাবিলিটি ও জেন্ডার রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট শ্রীমতী শম্পা সেনগুপ্ত, গায়ক অমিত কালী, বিশিষ্ট কোরিয়োগ্রাফার রক্তিম গোস্বামী, রোটারি ক্লাব অব লেকটাউনের সদস্যবৃন্দ, ইনার হুইলের সদস্যবৃন্দ, রানারের সদস্যবৃন্দ, ডাউনস্ সিনড্রোম এ্যাসোসিয়েশন কলকাতার সেক্রেটারি শ্রীমতী মঞ্জিরা মালাকার, বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার শিক্ষক-শিক্ষিকা, চিকিৎসক সহ ও আরও বহু মানুষ।

ডিউইশের পক্ষ থেকে সংস্থার ডিরেক্টর শ্রীমতী সুমিত্রা পাল বকসী বললেন- আজকের দিনে অটিজম সম্পর্কে সমাজকে সচেতন করতে আমরা এখানে মিলিত হয়েছি। আমরা অভিভূত আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে গরমকে উপেক্ষা করে এই বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে এই পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছে। তাদের প্রত্যেকের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

সচেতনতা যাত্রার আয়োজন করার জন্য উদ্যোক্তাদের ভূয়সী প্রশংসা করে ক্লিনিকাল সাইকোলজির তানেয়া মুখার্জ্জী বললেন – অটিজম নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নাই। দরকার একটু সচেতনতা ও বাবা-মার সহনশীলতা। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে অবশ্যই শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments