সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ– কুড়মি আন্দোলনের জেরে গত কয়েকদিন ধরে বিঘ্নিত হচ্ছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের পরিষেবা। বাতিল করতে হয়েছে একের পর এক দূরপাল্লার ট্রেন। আর তাতেই বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
কুড়মি সমাজকে এসটি তালিকাভুক্ত করার পাশাপাশি সারনা ধর্মকে পৃথক স্বীকৃতি ও কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা, এই তিন দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে লাগাতার আন্দোলনে নেমেছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কুড়মি সমাজের মানুষ। প্রথম দিন রেল অবরোধ না করলেও বুধবার সকাল থেকেই খড়গপুর ও আদ্রা ডিভিশনের বেশ কিছু স্টেশনে তারা অবরোধ করে। ফলে দূরাপাল্লা সহ একের পর এক ট্রেন বাতিল ও ট্রেনের যাত্রা পথ ঘুরিয়ে দিতে বাধ্য হয় দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। এর ফলে হয়রানির শিকার হন ট্রেন যাত্রীরা। বৃহস্পতিবারও রেল ও পথ অবরোধ চলে। এর ফলে রেলের খড়গপুর ও আদ্রা ডিভিশন মিলিয়ে ৭৮ টি বাতিল করা হয় । বহু ট্রেনের রুট পরিবর্তন করা হয়। শুক্রবারও জারি রয়েছে কুড়মি আন্দোলন। যার প্রভাব পড়েছে বাঁকুড়া সহ জঙ্গল মহলের জেলাগুলিতে। এদিন নতুন করে খড়্গপুর-হাটিয়া ১৮০৩৫, খড়্গুর-রাঁচি ১৮০৮৫, পুরুলিয়া-হাওড়া সুপার ফাস্ট ১২৮২৮, ১২৮৮৩ রুপসী বাংলা এক্সপ্রেস, ১৮০১২/১৪ হাওড়া-চক্রধরপুর ট্রেন বাতিল হয়েছে। বেশ কিছু এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন বাতিলের ঘটনায় বিপাকে পড়েছে যাত্রীদের একটা অংশ। স্টেশনে গিয়েও ট্রেন না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন যাত্রীরা। সব থেকে বেশী সমস্যায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা।
এই অবস্থায় আন্দোলনের তীব্রতা আরও বাড়লে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। উল্লেখ্য মাসখানেক আগে এই একই দাবিতে রাস্তা ও রেল অবরোধ করেন কুড়মি সমাজের মানুষজন। সেবারে টানা ৫ দিন বাকি রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল জঙ্গলমহল। এবারেও পরিস্থিতি সেই দিকে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা ওয়াকিবহাল মহলের। দাবি আদায় না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য এভাবেই রাস্তা ও রেল অবরোধ চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এমনকি তীব্র গরমও তাঁদের লড়াইয়ের পথ থেকে সরাতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে কুড়মি সমাজের মানুষ।