সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী)ঃ- আজ গুডফ্রাইডে, খ্রিস্টান ধর্ম অনুযায়ী আজকের দিনেই মানবতার অবতার স্বরূপ খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক ঈশ্বর পুত্র যীশু খ্রীষ্টকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল। গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যেমন বলেছিলেন যখন যখন ধর্মের হানি হয় তখন তখন আমি অবতীর্ণ হই এবং ধর্মের পুনঃ স্থাপন করি সৎ পুরুষদের উদ্ধার ও অধার্মিকদের বিনাশ করি, সেই রকম মানুষকে নতুন পথের দিশা দেখাতে পরিত্রাণ করতে আবির্ভূত হয়েছিলেন ঈশ্বর পুত্র যীশু।
তখন রোমের হেরোদ নামে এক হিংস্র রাজা ছিলেন যিনি বেথেলহেমে কুমারী মাতা মেরি গর্ভজাত সন্তান যীশুর আবির্ভাব সংবাদ শুনেই ভয় পেয়ে আদেশ জারি করেন, শহরে যত পুত্র সন্তান জন্মাবে তাদের সকলকে যেন হত্যা করা হয়, ঠিক যেমনটা কংস করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণের সময়। এই কথা শুনে যীশুর বাবা যোশেফ ও মা মরিয়ম যীশুকে নিয়ে মিশরে আত্মগোপন করেন। ঈশ্বরকে কীভাবে প্রাপ্ত হওয়া যাবে সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কোন উপায়টি শ্রেষ্ঠ তা বলতে গিয়ে তিনি তার সঙ্গী ইহুদিদের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তিনি রোগগ্রস্তদের আরোগ্য দান করেছিলেন এবং রূপক কাহিনীর মাধ্যমে শিক্ষাদান করতেন, তিনি সকল অনুগামীদের একত্র করেছিলেন। কিন্তু সব থেকে বেশি তিনি যা করেছিলেন তা হলো চৈতন্য মহাপ্রভুর মতো জগতকে ভালোবাসার শিক্ষা দিয়ে গিয়েছিলেন।
যীশুকে যারা ক্রুশবিদ্ধ করেছিল দেহত্যাগের পূর্বে যীশু ক্ষমা করেছিলেন তার স্রষ্টা ঈশ্বরের কাছে তাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেছিলেন।- তিনি যেন জগতকে শিখিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণের বলা গীতার সেই বাণী, যা হচ্ছে সবই ঈশ্বরের পরিকল্পনা, এতে মানুষ নিমিত্ত মাত্র, তাই মানুষের উপর রাগ করা উচিত নয়, ক্ষমা করায় প্রকৃত ধর্ম। অথবা রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সেই কথা, পাপকে ঘৃণা কর পাপীকে নয়। পবিত্র এই শুক্রবারের দিনে আমরা যদি যীশুর জীবনী মাথায় রেখে আমাদের সাথে অন্যায় করা ব্যক্তিদের মন থেকে ক্ষমা করতে পারি তবেই গুড ফ্রাইডে এর সার্থকতা।